বিজেপিতে যোগ দিতেই ‘মা’ মমতার বিরুদ্ধে বিস্ফোকর মন্তব্য ভারতীর

নয়াদিল্লি: সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিয়ে অসাংবিধানিক কাজ করেছে রাজ্যের পুলিশ। সিবিআই একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা চিটফান্ড তদন্তে পুলিশের উচিতছিল সিবিআই কর্তাদের সহযোগিতা করা। দীর্ঘদিনের জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার বিজেপিতে যোগ দিলেন রাজ্যের ফেরার আইপিএস ভারতী ঘোষ। একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এই প্রাক্তন পুলিশকর্তা এদিন দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। এরপরেই তিনি সিবিআই-পুলিশ সংঘাত নিয়ে

বিজেপিতে যোগ দিতেই ‘মা’ মমতার বিরুদ্ধে বিস্ফোকর মন্তব্য ভারতীর

নয়াদিল্লি: সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিয়ে অসাংবিধানিক কাজ করেছে রাজ্যের পুলিশ। সিবিআই একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা চিটফান্ড তদন্তে পুলিশের উচিতছিল সিবিআই কর্তাদের সহযোগিতা করা। দীর্ঘদিনের জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার বিজেপিতে যোগ দিলেন রাজ্যের ফেরার আইপিএস ভারতী ঘোষ।

একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ এই প্রাক্তন পুলিশকর্তা এদিন দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। এরপরেই তিনি সিবিআই-পুলিশ সংঘাত নিয়ে এই মন্তব্যকরেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ভারতী৷ সেই মঞ্চ থেকেই মরার উপরে খাঁড়ার ঘা দেওয়ার চেষ্টা করেন। চিটফান্ড মামলাগুলিতে তদন্তের জন্য সিবিআইকে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন তিনি, সম্পূর্ণ অভিযোগই গিয়েছে রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি রাজ্য প্রশাসনকে কটাক্ষ করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই সেখানে রাজ্য পুলিশের হস্তক্ষেপের কোনও কারণ নেই। সিবিআই একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা,সুতরাং তার কাজকর্মে হস্তক্ষেপ বা বাধাপ্রদান করা অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেন ভারতী। এদিন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র উপস্থিতিতে পদ্মফুলের পতাকা হাতে তুলে নেন এই প্রাক্তন আইপিএস।

বিজেপিতে যোগ দিতেই ‘মা’ মমতার বিরুদ্ধে বিস্ফোকর মন্তব্য ভারতীরএকদা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের “কাছের মানুষ” হিসেবে বেশ সুনাম ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের আইপিএস ভারতী ঘোষের। লালগড়, বেলপাহাড়ি এই নামগুলির সঙ্গে চলে আসত ভারতী ঘোষের নাম। মাত্র একবছরের ব্যবধানে সেই চিত্রটা আমূল বদলে গিয়েছে, শেষের দিকে ভারতীর কাজকর্মের ক্ষোভ জমছিল পুলিশমহলে, নবান্ন পর্যন্ত সেখবর ছড়াতে সময় লাগেনি। এরপর অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী ভারতী ঘোষকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করে দিলে পদত্যাগ করেন তিনি। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তি ও তোলাবাজির অভিযোগে তদন্ত শুরু হলে পালিয়ে যান ভারতী। এই মামলায় আগেই তাঁর স্বামী এমভি রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ রাজধানী থেকেই গত ডিসেম্বরে গ্রেপ্তার করা হন ভারতীর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডল। এখনও ভারতীর সম্পত্তি হিসেব নিকেশ নিয়ে তদন্ত করছে সিআইডি। মাঝেমধ্যে খবর আসত বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর বৈঠক করছেন ভারতী ঘোষ,এতদিনে সই বৈঠকের সার্থকতা প্রকাশ্যে এল।

জানা গিয়েছে, নোটিবন্দির পর পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার থেকে তাঁকে ব্যারাকপুরে বদলী করায় ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর চাকরিতে ইস্তফা দেন ভারতী৷ এরপর থেকেই তিনি ও তাঁর দেহরক্ষী গা ঢাকা দেন৷ একাধিকবার তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নগদ দু’কোটি টাকা উদ্ধার হয়৷ এছাড়াও একাধিক তথ্যপ্রমাণ উদ্ধার করে সিআইডি৷

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুডবুকে থাকা ভারতী ঘোষের উত্থান শুরু কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে৷ তার আগে বাম জমানায় তিনি ছিলেন সিআইডির সন্ত্রাসদমন শাখার অফিসার৷ পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ভারতীকে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (সদর) পদে নিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২০১২ সালের এপ্রিলে ঝাড়গ্রামের এসপি হন তিনি৷ ২০১৩-র অগস্টে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এসপি হন ভারতী৷ সেইসঙ্গে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার ভারপ্রাপ্ত এসপিরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে৷ অতীতে অনেক মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ৷ মমতা-বন্দনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ আখ্যাও দেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen + nine =