‘আয়লার’র পর এই প্রথম জোরালো ঘূর্ণিঝড়ের মুখিমোখি হতে চলেছে বাংলা

পঞ্চম দফা ভোটের মুখে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে একেবারে বাংলার অন্দরে ঢুকে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফনি৷ ওডিশায় আছড়ে পড়লেও তার দাপটে ৩ মে, অর্থাৎ শুক্রবার থেকে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের সামনে পড়বে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ। মূল প্রভাব পড়বে শনিবার। উপকূল এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে। আশঙ্কা অতি ভারী বর্ষণেরও। উত্তাল থাকবে সমুদ্র।

‘আয়লার’র পর এই প্রথম জোরালো ঘূর্ণিঝড়ের মুখিমোখি হতে চলেছে বাংলা

পঞ্চম দফা ভোটের মুখে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে একেবারে বাংলার অন্দরে ঢুকে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফনি৷ ওডিশায় আছড়ে পড়লেও তার দাপটে ৩ মে, অর্থাৎ শুক্রবার থেকে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের সামনে পড়বে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ। মূল প্রভাব পড়বে শনিবার। উপকূল এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে। আশঙ্কা অতি ভারী বর্ষণেরও। উত্তাল থাকবে সমুদ্র। তাই ৬ মে-র নির্বাচন তো বটেই, উপকূলের নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সময়ের মধ্যে নিরাপদে সরানোও এখন চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের।

২০১৩ সালে ‘ফাইলিনে’র পর এত জোরালো ঘূর্ণিঝড় ওড়িশায় আছড়ে পড়েনি। পশ্চিমবঙ্গে শেষ বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছিল ২০০৯ সালের মে মাসে। সেবার সুন্দরবন এলাকায় আছড়ে পড়া ‘আইলা’র গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি অভিঘাতের স্মৃতি ২০০৯ সালের ২৫ মে-র ‘আয়লা’। সে দিন সাগরে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠেছিল ঘণ্টায় ১১২ কিলোমিটারে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রবল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে সুন্দরবন। তার পর মাঝের দশ বছরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েনি বাংলায়। খুব কাছাকাছি এসেছিল ২০১৫ সালের বর্ষাকালে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় ‘গোহমেন’ বা ২০১৮ সালের ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’। কিন্তু বাংলাদেশ বা ওডিশায় আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় যখন বাংলায় এসেছে, তখন সেগুলি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল। ফলে বিপাকে ফেলেছিল শুধু বৃষ্টিই। সুতরাং, ‘আয়লা’র পর এই প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সামলানোর পরীক্ষায় রাজ্য প্রশাসন৷

সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’ আরও শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। গতকাল বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট নাগাদ এই ঘূর্ণিঝড় চেন্নাই থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে বঙ্গোপসাগরের ওপর ঘনীভূত ছিল। ঘূর্নিঝড়ের প্রেক্ষিতে পূর্বাঞ্চলীয় নৌ-কমান্ড প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে। নৌ-বাহিনীর একাধিক জাহাজ সর্বাধিক প্রভাবিত জায়গাগুলিতে মানবিক সহায়তা, উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিতে বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ে প্রস্তুত রয়েছে। বাহিনীর জাহাজগুলিতে অতিরিক্ত নাবিক ও চিকিৎসক সহ ছোট নৌকা, ত্রাণ সামগ্রী যেমন- খাবার, পোশাক, ওষুধপত্র, চাদর প্রভৃতি পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত করা হয়েছে। এছাড়াও, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে সহায়তার ব্যবস্হা করা হয়েছে। এছাড়াও, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে সহায়তার পাশাপাশি নৌসেনা বিমান ঘাঁটিগুলিতে একাধিক যুদ্ধ বিমানকে অনুসন্ধান, হতাহতদের নিরাপদ স্হানে নিয়ে আসা, আকাশ থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিক্ষেপ প্রভৃতি কাজের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মৌসম ভবন জানিয়েছে, ৩ মে বিকেলে পুরীর দক্ষিণে, গোপালপুর ও চাঁদবালির মধ্যবর্তী উপকূলে আছড়ে পড়বে ‘ফনি’। তার পর সেটি ওডিশার ভিতরে ঢুকে যাবে না। বরং, উপকূল ঘেঁষে এগিয়ে আসবে বাংলার দিকে। শনিবার দিঘার কাছাকাছি অঞ্চল দিয়ে রাজ্যের ভিতরে ঢুকে আসবে। তার পর পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার উপর দিয়ে সোজা বাংলাদেশে ঢুকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *