কলকাতা: করোনা ভাইরাসের বিশ্বব্যাপী অতিমারীর জেরে দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ স্কুল কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ভাইরাস শুধু যে অজস্র মানুষের প্রাণ নিয়েছে তাই নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই দিয়েছে এলোমেলো করে। অতিমারী আবহের প্রভাব পড়েছে শিশুদের উপরেও। এই দুঃসময়ে যাতে শিশুরা সুস্থ সবল থাকে, সেই কথা মাথায় রেখেই এবার নতুন ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।
অতিমারী আবহে লকডাউন ও তার পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকারি স্কুল পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটলেও মিড ডে মিল ব্যবস্থায় ছেদ পড়েনি। মিড ডে মিলে নিয়মিতই চলে আসছে পড়ুয়াদের জন্য খাবার বিতরণ। তবে স্কুল পড়ুয়াদের বাড়তি পুষ্টির জন্য এবার সেই মিড ডে মিলের খাবারের তালিকাতে নতুন কিছু সংযোজন করা হয়েছে। জানা গেছে, এবার থেকে মিড ডে মিলে বাকি খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়াদের দেওয়া হবে ডাল, চিনি এবং সয়াবিনও।
এদিন শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে মিড ডে মিলের এই নতুন সংযোজনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, আগামী মার্চ ও এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকারি স্কুলের সমস্ত পড়ুয়া মিড ডে মিল হিসেবে পাবে ডাল চিনি আর সয়াবিন। এতদিন যে খাবার তারা পেয়ে আসছিল তার সঙ্গেই অতিরিক্ত হিসেবে যুক্ত হবে এগুলি। মূলত কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও যাতে শিশুদের পুষ্টির যাতে অভাব না হয় তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে শিক্ষা দফতর।
বস্তুত, করোনা অতিমারীর মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর থেকে বাড়ি বাড়ি মিড ডে মিল পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে। অবশ্য বর্তমানে স্কুল পড়ুয়াদের অভিভাবকরাই মাসে মাসে স্কুলে গিয়ে সংগ্রহ করেন প্রাপ্য মিড ডে মিল। মিড ডে মিল বাবদ স্কুল থেকে দেওয়া হয় ২ কেজি চাল, ১ কেজি ছোলা, ১ কেজি আলু ও ১০ টাকার একটি সাবান। জানা গেছে, আগামী দিনে এই মিড ডে মিলের সঙ্গেই দেওয়া হবে ২৫০ গ্রাম ডাল, ২০০ গ্রাম সোয়াবিন এবং ৫০০ গ্রাম চিনি। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, অতিরিক্ত এই খাবার গুলি পাওয়া যাবে কেবলমাত্র মার্চ এবং এপ্রিল এই দুই মাসের জন্যেই।
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা এই বরাদ্দকে সমিতির লাগাতার আন্দোলনের জয় বলে অভিহিত করেছেন৷ বলেন, ‘‘আমফান-করোনার পরবর্তী ১১ মাস পর শিশুদের ডাল সোয়াবিন ভোটের দিকে তাকিয়ে বরাদ্দ করা হয়েছে, নচেৎ এতদিন দেওয়া হয়নি কেন?’’ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন দু’বেলা পুষ্টিকর খাদ্য বরাদ্দের দাবি করেন তিনি৷