কলকাতা: ২১ শে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে আরও একবার কেন্দ্রকে তুলোধোনা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, ২০১৯ এ রাজ্যে কয়েকটা আসন পেয়ে এরা যেন সারা পৃথিবী জয় করে নিয়েছে৷ মনে রাখবেন, ২১ মে বদলা নিয়ে বিজেপির জামানত জব্দ করে বুঝিয়ে দিতে হবে যে, বাইরে থেকে এসে বাংলাকে কব্জা করা যায় না। বাংলাকে চালাবে বাংলার মানুষ৷
তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, জনগণ সাবধান, আপনাদের করছি আহ্বান, বিজেপির সাথে আছে অনেক অনেক টাকা আর গান। ভুলেও যদি ওদের বিশ্বাস করেন, তা হলে জীবনও যাবে, জীবিকাও যাবে।
তিনি বলেন, গুণ্ডামী, দাঙ্গা, আগুন লাগানো, ভাঙচুর করা, কুৎসা, চক্রান্ত, অপপ্রচার করাই এদের কাজ৷ দিল্লির সরকার আসলে চক্রান্তের সরকার৷ দিল্লি সরকার কয়েকটা ক্যাডারকে নিয়ে যা ইচ্ছা করে তাই করে বেরাচ্ছে৷ প্রতিদিন অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে৷ বাংলায় নাকি আইন শৃঙ্খলা নেই৷ বাংলায় যদি আইন–শৃঙ্খলা না থাকে তাহলে কোথায় আছে? উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ চলছে বললেও ভুল হবে৷
সেখানে মানুষের কথা বলবার ক্ষমতা নেই৷ পুলিশের কাছে ডায়রি করতে যাওয়ার আগে পুলিশকেই খুন করে দেওয়া হচ্ছে৷ এনকাউন্টারের নাম করে একসঙ্গে একগাদা পুলিশকে খুন করে দেওয়া হচ্ছে৷ যে খুন করল, তাকেও খুন করে দেওয়া হল৷ যাতে কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকে৷ এটা কোন সরকার? বিজেপি জমানায় ত্রিপুরা ও অসমের কী পরিস্থিতির হয়েছে, এদিন সে কথাও তুলে ধরেন তৃণমূল নেত্রী৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরার মানুষ আজ ভয়ে গুটিয়ে আছে৷ ভয়ে কথা বলতে পারে না৷ অনেকের চাকরি চলে গিয়েছে৷ অনেকে খেতে পাচ্ছে না৷ আর অসমে এনআরসি’র নাম করে কী অত্যাচার হয়েছে তা কারও অজানা নয়৷ কখনও আসমিয়াদের নাম বাদ গিয়েছে তো কখনও বাঙালি, মারোয়ারি, বিহারির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে৷ এত অত্যাচারের পরও বড় বড় কথা বলছে কেন্দ্রের সরকার৷ নিজেদের দিকে না তাকিয়ে গায়ের জোড় ফলানো হচ্ছে৷
তিনি বলেন, রেলওয়ে সম্পূর্ণ বিক্রি করে দেওয়া হল৷ কোল ইন্ডিয়া বিক্রি করে দেওয়া হল৷ এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে৷ আর বলা হচ্ছে পাঁচ বছরের জন্য কর্মচারীরা বিনা বেতনে ছুটি নিন৷ আবার কোভিডের নাম করে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের ডিএ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ সাংসদদের বেতন কাটা হচ্ছে, সরকারি কর্মীদের মাইনে কেটে নেওয়া হচ্ছে৷ অনেক রাজ্যেই কর্মীরা মাইনে পাচ্ছে না৷ ২ লক্ষ কোটি টাকার উপর ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু করলেও আমরা ১ তারিখে বেতন দিই৷ আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি এই আট বছরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলা৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, রাজ্য সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে চাল কেনে, তাই রেশন দোকানে যে ভালো চালটা দেখতে পান, সেটা আমাদের বাংলার কৃষকদের ফলানো চাল৷ খারাপ চালটা দেয় ফুড কর্পোরেশন৷ অর্থাৎ কেন্দ্র৷ এছাড়াও তিনি জানান, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তপশিলি পড়ুয়ারা কেন্দ্র থেকে কোনও বৃত্তি পায় না৷ তাদের বৃত্তি দেয় রাজ্য সরকার৷