কলকাতা: পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম রাজ্য বিধানসভায় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ বাজেট পেশের পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের নানা প্রকল্প চলছে৷ সেগুলি সবকটাই চলবে৷ এই বছর মোট বাজেট বরাদ্দ ৩.৮ গুণ বেড়েছে৷ সেই সঙ্গে তোপ দেগে বলেন, “সারা ভারতবর্ষে একমাত্র বাংলাই সরকারি কর্মচারিদের পেনশন দেয়। ওরা বড় বড় কথা বলে। বিজেপির সরকার যেসব রাজ্যে আছে, সেখানে কোথাও তো পেনশন দেওয়া হয় না।”
আরও পড়ুন- গরু পাচার মামলায় রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ, হাই কোর্টে ধাক্কা অনুব্রতর
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজস্ব আদায় ৩.৭৬ গুণ বৃদ্ধি পয়েছে৷ কোভিডের মতো মহামারী, যশ-আম্পানের মতো প্রাকৃতির দুর্যোগের মধ্যেও রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব হয়েছে৷ সামাজিক পরিষেবায় বরাদ্দ ১০.৭ গুণ বেড়েছে৷ যা ২০১০-১১-তে ছিল ৬,৮৪৬ কোটি টাকা৷ ২০২২-২৩-এ প্রস্তাব করা হয়েছে ৭৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা৷ যা উন্নয়নশীল সরকারের সবচেয়ে বড় মাপকাঠি৷ অন্যদিকে, পরিকাঠামোয় বরাদ্দ বেড়েছে ৬ গুণ৷
তিনি জানান, কৃষি বিপণনে ৪০৩.৩০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ একই সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রে ৯ হাজার ৩১০.২০ কোটি বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কৃষি ক্ষেত্রে ১১.৩ গুন বরাদ্দ বেরেছে৷ কৃষকদের সাহায্য করতে কৃষকবন্ধু প্রকল্প আনা হয়েছে৷ এর থেকে ৭৮ লক্ষ কৃষক সাহায্য পেয়েছেন। এছাড়াও চা বাগানে কৃষি আয়ের উপর কর মকুব করা হচ্ছে। ২০২৪ -এর মধ্যে সর্বত্র পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে।
এগ্রিকালচার বিভাগে বরাদ্দ ৩৩.২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ উচ্চ শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে ২৫.৪ গুণ৷ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে বরাদ্দ বড়েছে ১৯.৩ গুণ৷ নারী এবং শিশু কল্যান প্রকল্পে ১৭.৫ গুণ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ১৯ হাজার ২৩৮ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বেড়েছে ১০.৬ গুণ৷ পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নয়নে প্রস্তাব উপজাতির উন্নয়নের জন্য ৬.৭ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে৷ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগে বরাদ্দ বেড়েছে ৮.২ শতাংশ৷
মুখ্যমন্ত্রী জানান, লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ১ কোটি ৫৩ লক্ষ এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন ৯ কোটি মানুষ৷ খাদ্যসাথী প্রকল্পে ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্য খাদ্য দেওয়া হচ্ছে৷ ৪৮ লক্ষ গ্রামীণ আবাসন নির্মান করা হয়েছে৷ আগামী পাঁচ বছরে আরও ৫ লক্ষ আবাসন নির্মাণ করা হবে আদিবাসীদের জন্যে৷ ১০ বছরে ১ লক্ষ ৩৪১ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে৷ এছাড়াও বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, মানবিক ভাতা প্রাপকের সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ৷ সবুজ সাথী প্রকল্পে ১ কোটি ৩ লক্ষ সাইকেল দেওয়া হয়েছে৷
তপশিলি বন্ধু প্রকল্পে ১০ লক্ষ ২৩ হাজার ভাতা দেওয়া হয়েছে৷ জয় জহর প্রকল্পে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ভাতা দেওয়া হয়েছে৷ এছাড়াও শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে ১ কোটি সাড়ে ৪ লক্ষ স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে৷ কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৪৭ লক্ষ ৫৭ হাজারের বেশি মানুষকে৷ ঐক্যশ্রী প্রকল্পে ২ কোটি ৯২ লক্ষ সংখ্যালঘু স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে৷ কন্যাশ্রীর সুবিধা পাচ্ছেন ৭৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রী৷ বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে দেড় কোটির বেশি মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন৷ রূপশ্রী প্রকল্পে ১১ লক্ষ ১০ হাজার জনকে বিয়ের জন্যে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে৷ এছাড়াও সবুশ্রী ও গতিধারা প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে বহু মানুষ৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>