কলকাতা: কথায় বলে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।সেতু , উড়ালপুলের পর এবার জলের ট্যাংক।উল্টোডাঙ্গা উড়ালপুল, মাঝেরহাট ব্রিজের মত একাধিক সেতু ভেঙে পড়ার পর রাজ্যের সেতু উড়ালপুলের বেহাল দশা নিয়ে টনক নড়েছিল রাজ্য সরকারের। তড়িঘড়ি সব সেতু ও উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইমত বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। একই ভাবে এবার বাঁকুড়ার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্যের সব পানীয় জলের ওভারহেড ট্যাঙ্কের হেল্থ অডিটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিধানসভায় একথা জানিয়েছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।
গতমাসে বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের একটি জলাধার ভেঙে পড়ে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করার ফলেই মাত্র চার বছরের পুরনো জলের ট্যাঙ্ক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, ওই ট্যাঙ্কে ৭ লক্ষ লিটার জল মজুত থাকত। গড়গড়িয়া ও বিক্রমপুর পঞ্চায়েতের ১২ টি গ্রামে জল সরবরাহ করা হত ট্যাংক থেকে।ওই জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার ঘটনায় রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন। গাফিলতি প্রমাণ হলে ঠিকাদার সংস্থার লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এদিন বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনের এক অতিরিক্ত প্রশ্নের জবাবে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তরের মন্ত্রী জানান,বিভিন্ন জল প্রকল্পের জন্যে নির্মিত জলাধার গুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্যে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধাপে ধাপে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট সন্তোষজনক না হলে জলাধার সংস্কারে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হবে ।মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন বর্তমানে রাজ্যের সাতটি জেলার যে ৮৩ টি আর্সেনিক অধ্যুষিত ব্লক রয়েছে সেখানে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করার জন্যে ৪৭টি প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে সব প্রতিটি বাড়িতে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে। বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। গ্রামাঞ্চলের ভোটব্যাংকে ধস নামতে পারে যদি জলাধার গুলির ভগ্নদশা মেরামত না করা হয়। ঘটতে পারে বড় কোনও বিপর্যয়। সেই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই এবার সেতুগুলির পাশাপাশি জলের ট্যাঙ্কগুলিরও স্বাস্থপরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।