বিশ্বের আঙিনায় বাংলা: কেমন গেল গোটা বছর

জানুয়ারি মাসে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে বিপুল সাড়া থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাসে দেশের সেরা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে স্কচ পুরস্কার৷ ২০১৮ সালে একাধিক পুরস্কার ও সম্মান আসে বাংলার ঝুলিতে৷ ২০১৮ সালের কিছু মুহূর্ত: জানুয়ারি: ২০১৮ সালের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রায় ২.২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। প্রাপ্ত প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে সব মিলিয়ে প্রায়

বিশ্বের আঙিনায় বাংলা: কেমন গেল গোটা বছর

জানুয়ারি মাসে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে বিপুল সাড়া থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাসে দেশের সেরা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে স্কচ পুরস্কার৷ ২০১৮ সালে একাধিক পুরস্কার ও সম্মান আসে বাংলার ঝুলিতে৷

২০১৮ সালের কিছু মুহূর্ত:

জানুয়ারি: ২০১৮ সালের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রায় ২.২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। প্রাপ্ত প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। উৎপাদন, আইটি, সিমেন্ট, সেবা, পর্যটন, পরিকাঠামো, দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান হবে।

ফেব্রুয়ারি: চলতি বছরেই বিশ্বব্যাঙ্কের থেকে রাজ্যের কয়েক হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এক থেকে দেড় কোটি টাকা করে আর্থিক অনুদান পেতে চলেছে৷ সেই টাকা উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারবে পঞ্চায়েতগুলি৷ এর ফলে যে প্রকল্প ২০২২ সাল পর্যন্ত চলার কথা ছিল, তা অনেক আগেই শেষ হয়ে যাবে৷

অন্য সব রাজ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রাজ্য সরকারের সবুজ সাথী প্রকল্প এবং ই-আবগারি প্রজেক্ট জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পুরস্কার ছিনিয়ে নিল। ২৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ৯৫০টি প্রকল্পের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের এই পুরস্কার প্রাপ্তির কথা চিঠি দিয়ে নবান্নকে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল ট্রেনিং (ডিওপিটি)। এই পুরস্কারই যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

মার্চ: দার্জিলিঙের বাণিজ্য সম্মেলনে ২,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, হোটেল, দুগ্ধজাত, অ্যাকোরিয়াম, অর্কিড, টি-পর্যটন, কৃষিজ ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে এই লগ্নির প্রস্তাব আসে।

এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচীতে মিলল বিরাট সাফল্য। ২০১৮ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে ২০১৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের তুলনায় ২২ শতাংশ পথ দুর্ঘটনা কমেছে এ রাজ্যে।

মে:  একশো দিনের কাজে আবারও বাংলার জয়জয়কার। কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলার কুচবিহার সহ ৬টি জেলা সেরার তালিকায় রয়েছে।

জুন: ২০১৮ সালে ইতিহাস গড়ল বাংলা। সরকারি পরিষেবা প্রদানে এই প্রথম সবচেয়ে বেশি সংখ্যক স্কচ পুরস্কার পেল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের কাজের এই স্বীকৃতি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে সাধারণ মানুষের কল্যাণের স্বার্থে গত ৭ বছরে উন্নয়নের যে বৃহৎ কর্মযজ্ঞ রাজ্যে শুরু হয়েছে তা সারা দেশের কাছে এক নজির।

জুলাই: অপচয় রুখতে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর৷ নবান্নে খরচ কমানো সংক্রান্ত বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

আগস্ট: ছোট ও মাঝারি শিল্প–সম্মেলনে মোট ১১৩ কোটি টাকার বিদেশি বরাত মিলেছে। রাজ্যের শিল্পীদের তৈরী ক্রিসমাস সজ্জা, বাঁকুড়ার টেরাকোটা, হাতে তৈরি কাপড়ের ব্যাগ, জুতো–সহ অন্যান্য হস্তশিল্পসামগ্রী যাবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। দু’‌দিনের সম্মেলনে ৭০টি স্টলে ৯ হাজার শিল্পসামগ্রীর প্রদর্শনী করা হয়। যা বিশ্বের কাছে বাংলার হস্তশিল্প, তাঁতশিল্প ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে।

সেপ্টেম্বর: বিনিয়োগের লক্ষ্যে জার্মানি ও ইতালি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফ্রাঙ্কফুর্ট ও মিলানে সফল শিল্প সম্মেলন থেকে শুরু করে ডুসেলডর্ফে শিল্পমন্ত্রীর বৈঠক – প্রত্যেকটি জায়গাতেই বিপুল সাড়া মিলেছে। আগামী বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রতিনিধিদল পাঠানোর অঙ্গীকার দুই দেশেরই। এক কথায়, বিশ্বের দরবারে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বাংলা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে।

অক্টোবর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় কলকাতার রাজপথে শহরের সেরা পূজামণ্ডপগুলির বিসর্জন শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সাল থেকে। একই জায়গায় মানুষ যাতে সেরা প্রতিমা দেখার সুযোগ পান সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এই উদ্যোগ নেন।

এবার ছিল এই কার্নিভালের তৃতীয় বর্ষ। আলোর সাজে তুলে ধরা হয় রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, শিশু সাথী, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ, খাদ্যশ্রীর মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে। এছাড়াও বিদেশি পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হয় বাংলার সংস্কৃতি ও শিল্প ভাবনাকে।

নভেম্বর: চলচ্চিত্র উৎসব এবার ২৪ বছরে পদার্পণ করে। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের অন্যতম আকর্ষণ ছিল— বাংলা সিনেমার ১০০ বছর। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চলচ্চিত্র উৎসবে শতবর্ষের বাংলা সিনেমার জন্য ছিল আলাদা প্যাভেলিয়ন। এবার থিম কান্ট্রি ছিল অস্ট্রেলিয়া।

২০১১ সাল পর্যন্ত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কুক্ষিগত ছিল কিছু মুষ্টিমেয় মানুষের জন্য। সাধারণ মানুষদের সেই অর্থে প্রবেশ অবাধ ছিল না। সাধারণের জন্য সিনেমাকে নন্দন ও রবীন্দ্র সদনের বাইরে যেতেও দেওয়া হত না। পুরো উৎসবে খুব কম সংখ্যক সিনেমা দেখানো হত। এই প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিভাগে দুটি বাংলা সিনেমা মনোনীত হয়েছে।

ডিসেম্বর: গ্রামোন্নয়ন, মাঝারি শিল্প-সহ একগুচ্ছ সরকারি পরিষেবায় অসাধারণ পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি ও উদ্ভাবনীর জন্যে আন্তর্জাতিক ‘স্কচ অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও গোটা দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের জনসেবামূলক প্রকল্পের জন্য দেশের অন্যান্য রাজ্যকে টেক্কা দিয়ে বাংলার একাধিক সরকারি প্রকল্প এই সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরষ্কার জিতে নিয়েছে।

নতুন বছরের শুরুতে কৃষক পরিবারের জন্য সুখবর। নতুন দু’টি প্রকল্পের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কৃষক পরিবারের ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে যে কোনও সদস্যের স্বাভাবিক অথবা অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ টাকা করে দেবে৷ এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কিষাণ বন্ধু’ প্রকল্প৷ এছাড়া কৃষকদের সহযোগিতার জন্য বছরে একর প্রতি দু’ধাপে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি আরও জানান, ১ জানুয়ারি থেকেই প্রকল্পটি শুরু হলেও ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকল্পের জন্য আবেদন জমা নেওয়া হবে৷

সূত্র- AITC

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =