কলকাতা: বাকিদের মতো এদিন শোভনের পাশেও দাঁড়ালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ একদা দিদির কাছের কানন তাঁর ছাত্রছায়া ছেড়ে মোদিতে আশ্রয় খুঁজতে গেলেও, সে পথও সুগম হয়নি তাঁর৷ বিধানসভা নির্বাচনে নিজের পছন্দের কেন্দ্র থেকে টিকিট তো পানইনি, উলটে সোমবার সকালে নারদকাণ্ডে তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রদের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করে সিবিআই। তবে কানন দিদিকে ছাড়লেও, তাঁর বিপদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু তাঁকে ছেড়ে দেননি৷ বরং পাশে দাঁড়ালেন৷
এমনকি যে স্ত্রীকে ছেড়ে তিনি চলে গিয়েছিলেন, সেই রত্না চট্টোপাধ্যায়ও শোভন চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হতেই নিজাম প্যালেসে হাজির হন৷ বৈশাখীর সঙ্গে শোভনের ‘ঘনিষ্ঠতা’ যত বেড়েছে, ততই দূরত্ব বেড়েছে রত্নার সঙ্গে। দিন কয়েক আগেও শোভন-বৈশাখী বনাম রত্না সংঘাত খবরের শিরোনামে ছিল। রত্নাদেবী এদিন নিজাম প্যালেসে পৌঁছে বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির লোক হিসেবে এসেছি। দেখি ওরা কী বলে…’ স্ত্রী রত্না এসার পরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু বৈশাখীদেবীর খোঁজ শুরু হয়? জানা যায়, তিনিও নিজাম প্যালেসেই আছেন৷ একটি সংবাদমাধ্যমকে ফোনে তিনি বলেন, ‘নিজাম প্যালেসে আছি। একদিকে গণতন্ত্রের চরম অপমান করল বিজেপি। অপরদিকে, যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এসে সবার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা একটা নিদর্শন। এ রাজ্যের কারও ওপর আক্রমণ হলে, তিনিই এগিয়ে আসবেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেল। গোটা দেশের কাছে বিজেপি নগ্নভাবে প্রকাশ করে দিল, দু’টো তোতাপাখি বসিয়ে রেখেছে।’ তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তৃণমূল নেত্রী কোনও আন্দোলনের ডাক দিলে যাবেন? বৈশাখীদেবীর উত্তরের বলেন, ‘উনি বললে নবান্নে ওনার চটিও রেখে আসতে পারি। শোভনের পাশে যেভাবে উনি এসে দাঁড়ালেন, ওনার জন্য আমি প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।’
তৃণমূল নেতাদের পাশাপাশি শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও সিবিআইয়ের গ্রেফতার করাটা কি বিজেপির প্রতিহিংসা? বৈশাখীদেবীর জবাব, ‘নন্দীগ্রামে কারও জয় নিয়ে শোভনবাবু যখন প্রশ্ন তুলেছিলেন বা আমরা যখন বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছিলাম, তখনই বুঝেছিলাম এবার খাঁড়া নেমে আসতে পারে। এখন অবশ্য তা নিয়ে ভাবছি না। মুখ্যমন্ত্রী পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, শক্তি পাচ্ছি।’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই ধরনের প্রতিহিংসার জন্য বাংলার মানুষের কোনও ক্ষতি হলে দায় বিজেপির ঘাড়েই বর্তাবে। তাঁর কথায়, ‘যে সময় এটা করা হল, পুর প্রশাসককে এনে গ্রেফতার করল। করোনায় এরপর যে কজন মারা যাবে, তার দায় বিজেপিকেই নিতে হবে।’– ফাইল ছবি৷