‘ভেবেছিলাম নিজে রান্না করে মাংস ভাত খাওয়াব …’, অভিষেকের জন্মদিনে শোকে পাথর বাবা

‘ভেবেছিলাম নিজে রান্না করে মাংস ভাত খাওয়াব …’, অভিষেকের জন্মদিনে শোকে পাথর বাবা

কলকাতা: ৭ সেপ্টেম্বর৷ আজকের দিনটা বাগুইআটির জগতপুরের নস্কর পরিবারের কাছে ছিল বড়ই আনন্দের৷ আজ যে ছেলের জন্মদিন৷ সকাল থেকেই বাড়িতে চলত ভালোমন্দ রান্না৷ কিন্তু ১৭ বছরের জন্মদিন আর পালন করা হল না তার৷ অকালে চলে গেল অভিষেক৷ অপহরণের পর নৃশংশ ভাবে খুন করা হয় তাকে৷ ছেলে আর ছেলের বন্ধুদের মাংস ভাত খাওয়ানোর ইচ্ছেটা আর পূরণ হল না৷ 

আরও পড়ুন- বুধের সকালে মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়িতে CBI হানা, কয়লা পাচারকাণ্ডে চলছে তল্লাশি

অপহরণ এবং খুনের ঘটনায় অভিষেক নস্করের পরিবার এখন শোকে পাথর। তাঁর বাবা বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এবার ছেলের জন্মদিনে নিজের হাতে মাংস ভাত রান্না করে খাওয়াব। পাড়ায় ছেলের যত বন্ধু রয়েছে, সকলকে মাঠে ডেকে খাওয়াব। ওরা সারাদিন হইহুল্লোড় করবে৷ কিন্তু, সবটাই শেষ হয়ে গেল। কিছুই করতে পারলাম না ছেলের জন্য।”   

এদিও বারবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিষেকের বাবা। তিনি বারবার হলেন, পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করলে ছেলেকে হারাতে হতো না। বাগুইআটি থানার পুলিশ এবং বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাগুইআটির দুই নিহত স্কুল ছাত্রের পরিবারই। তাঁদের অভিযোগ, “পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করেনি৷” অভিষেকের বাবা বলেন, “অনেক আগেই অভিযোগ পেয়েছিল পুলিশ৷ তা সত্ত্বেও দু’সপ্তাহ ধরে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পুলিশ তার ভূমিকা পালন করলে আমার ছেলেটার সঙ্গে এমনটা হত না।” তিনি আরও বলেন, “এতদিন কি পুলিশ ঘুমোচ্ছিল? কেন এতগুলো দিন সময় লেগে গেল?”

প্রসঙ্গত, গত ২২ অগাস্ট বাগুইআটির জগৎপুর থেকে অপহৃত হয় মাধ্যমিকের দুই ছাত্র অভিষেক নস্কর এবং অতনু দে। তাঁদের বিস্কর খোঁজাখুজির পর ২৪ অগাস্ট পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে দুই পরিবার। এদিকে ২৩ অগাস্টই ন্যাজাট থেকে অতনু দে-র দেহ উদ্ধার হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ২৫ অগাস্ট হাড়োয়া থেকে উদ্ধার হয় অভিষেকের দেহ। নয়ানজুলির দু’টি পৃথক জায়গা থেকে দুই ছাত্রের দেহ উদ্ধার করা হয়।  ২৬ অগাস্ট অতনু এবং অভিষেকের ছবি বসিরহাট থানায় জমা দেওয়া হয়। কিন্তু বিধাননগর কমিশনারেটের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্বন্বয় ছিল না বলেই অভিযোগ অভিষেক ও অতনুর পরিবারের। বসিরহাট মর্গে তিনটি অশনাক্ত দেহের তথ্য পায় পুলিশ। অনুমান ছিল, এদের মধ্যে দুজনের দেহ ওই দুই কিশোরের হবে। কিন্তু তা বুঝতে পেরেও কেন বসিরহাট থানার পুলিশের কোনও সন্দেহ হল না, সেই প্রশ্ন উঠছে।