মামা-ভাগ্নীর পরিচয়ে লিভ-ইন! অয়ন ঘনিষ্ঠ এই ‘রহস্যময়ী’ কে?

মামা-ভাগ্নীর পরিচয়ে লিভ-ইন! অয়ন ঘনিষ্ঠ এই ‘রহস্যময়ী’ কে?

কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল গ্রেফতার হতেই চর্চায় ‘রহস্যময়ী’৷ তিনি কে? অয়নের সঙ্গে কতটাই বা গভীর তাঁর সম্পর্ক? ইডি আধিকারিকদের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য৷ 

আরও পড়ুন- দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়নের টাকাতেই ছবি কৌশিকের? একই ফ্রেমে ঋত্বিক, সোহিনী, অর্জুন

অয়নের সূত্র ধরে এখন ইডির নজরে ওই রহস্যময়ী নারী! যাঁর নাম উঠে আসছে অয়ন শীলের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই৷ নাম শ্বেতা চক্রবর্তী। বাড়ি নৈহাটির বিজয়নগরে। এক সময় কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি চলত মডেলিং-এর কাজ৷  বাবা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন কর্মী। অয়নের স্ত্রীর মাধ্যমেই হয়েছিল তাঁদের মোলাকাত৷ পরবর্তী সময়ে শান্তনু ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী অয়ন শীলের প্রোমোটারির ব্যবসা দেখভাল করতেন শ্বেতা৷ তবে তাঁদের মধ্যে নিখাদ প্রফেশনাল সম্পর্ক ছিল না৷ সম্পর্ক ছিল অনেকটাই গভীর৷ অয়নের দফতরে হানা দিয়ে ইডি-র অফিসাররা যে সকল নথি হাতড়ে পেয়েছেন, তাতে বারবার উঠে এসেছে রহস্যময়ী শ্বেতার নাম৷ এমনকী অয়নের সঙ্গে শ্বেতার জয়েন্ট অ্যাকাউন্টও ছিল৷ ওই অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের লেনদেনও হয়েছিল বলেও জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শ্বেতাকে দামী এসইউভি গাড়িও উপহার দিয়েছিলেন অয়ন শীল। এছাড়াও তদন্তে নেমে বেশ কিছু জায়গায় তাঁদের ফ্ল্যাটের হদিশ পেয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। 

সাল ২০১৭৷ ওই বছর অয়ন শীলের সঙ্গে পরিচয় হয় মডেল শ্বেতা চক্রবর্তীর। যোগসূত্র গড়ে দিয়েছিলেন অয়নেরই স্ত্রী৷ পরবর্তীতে অয়ন শীলের প্রোমোটিংয়ের ব্যবসার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হন শ্বেতা। অয়নের যোগ ছিল টলিউডেও৷ তাঁর প্রোডাকশন হাউসের তৈরি ‘কবাডি কবাডি’ সিনেমাতেও অভিনয় করেন এই মডেল অভিনেত্রী। ওই সিনেমার পরিচালক ছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ওই ছবিতে দেখা গিয়েছিল ঋত্বিক, সোহিনী সহ আরও অনেককেই৷ ‘কবাডি কবাডি’ ছবির মাধ্যমেই টলিউডে অভিষেক হয়েছিল শ্বেতার।   

অয়নের ৩২টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট শ্বেতার নামে৷ মিলেছে শ্বেতার সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের হদিশও৷ শ্বেতার নামে থাকা ওই অ্যাকাউন্ট থেকেই মেটানো  হয়েছিল একটি বিলাসবহুল গাড়ির দাম৷ সেই রশিদ মিলেছে অয়ন শীলের বাড়িতে। অয়নের বাড়িতে মিলেছে শ্বেতার নামে থাকা একটি সম্পত্তির নথিও। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, শ্বেতা যদি নিজের টাকা দিয়েই গাড়ি বা ওই সম্পত্তি কিনে থাকেন, তাহলে সেই নথি অয়নের অফিসে এল কী ভাবে?  

শ্বেতা দীর্ঘদিন কামারহাটি পৌরসভায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করেছেন৷ আর ব্যবসায়ী অয়ন শীলের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি ও ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে, তা পৌরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার৷ সেই নথি ঘেঁটেই প্রথম শ্বেতা চক্রবর্তীর খোঁজ পান তদন্তকারী অফিসাররা। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে শ্বেতাকে তলব করা হয়েছে ইডি দফতরে।

উঠে এসেছে আরও বিস্ফোরত তথ্য৷ ইডি আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন কামারহাটি পুরসভার ঠিক উল্টোদিকে জগন্নাথ নিকেতন নামে একটা আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে অয়ন শীল এবং শ্বেতা চক্রবর্তীর। জগন্নাথ নিকেতনের এক আবাসিক জানান, অয়ন শীল ও শ্বেতা চক্রবর্তী মামা-ভাগ্নীর পরিচয় দিয়ে এই ফ্ল্যাটে থাকতেন। এক বছর আগে এখানে এসেছিলেন অয়ন৷ তবে কয়েক সপ্তাহ আগেও গাড়ি নিয়ে এই আবাসনে এসেছিলেন শ্বেতা৷ তারপর অবশ্য তাঁদের আর কোনও খোঁজখবর পাওয়া যায়নি।