কলকাতা: ত্রাতাই যখন প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে, তখন তার গতিবিধি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন আছে। সেক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্সের বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে নিয়ম বিধি কড়াকড়ি করতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এনিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বিধানসভায় বিল পেশ করা হবে বলে জানা গেছে। অ্যাম্বুলেন্সের রেজিস্ট্রেশন সহ সাইরেনের উচ্চমাত্রা নির্দিষ্ট করার বিষয়টিও উল্লেখ থাকবে বিলে। বিল পাস হয়ে গেলে তার আইন হিসেবে গণ্য হবে। এই অভিনব আইন রাজ্যে প্রথমবার।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্যে যে অ্যাম্বুল্যান্সগুলি চলে, তার বেশিরভাগই মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র গাড়ি হিসেবে নথিভুক্ত করা। অর্থাৎ সরকারি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে নথিভুক্ত নয়। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একবার বিল পাশ হয়ে গেলে যেকোনও গাড়িকে 'অ্যাম্বুল্যান্স' হিসেবে চালানো যাবে না। এরজন্য নির্দিষ্টভাবে ‘অ্যাম্বুল্যান্স’-এর রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময়ে রেজিস্ট্রেশন রিনিউও করাতে হবে।
তবে বর্তমানে এভাবে নথিভুক্তি করণের ব্যবস্থা না-থাকায় রাজ্যে এই মুহূর্তে ঠিক কত সংখ্যক অ্যাম্বুল্যান্স চলে, তার সঠিক হিসেব নেই সরকারের খাতায়। শুধু তাই নয়, এখন ‘বেসিক লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্স’ (বিএলএস) এবং ‘অ্যাডভান্স লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্সে’ (এএলএস) র মধ্যে আইনিভাবে কোনো পার্থক্য করা হয়না। ফলে উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও বহু অ্যাম্বুল্যান্স এএলএস হিসেবে উল্লেখ করা থাকে। নতুন আইন এলে উপযুক্ত পরিকাঠামোর বিচার করেই অ্যাম্বুল্যান্সগুলিকে বিএলএস অথবা এএলএস রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। অ্যাম্বুলেন্সের শব্দদূষণ রোধে সাইরেনের শব্দমাত্রা নির্দিষ্ট করেন দেওয়া হবে।
সেক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের শব্দমাত্রা দিনে সর্বোচ্চ ৬৫ ডেসিবেল ও রাতে ৫৫ ডেসিবেল কর হবে। জাতীয় পরিবেশ আদালতে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা শব্দদূষণ রুখতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন, সেখানেও অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্সের লাইসেন্স রিনিউ করার সময় সাইরেনের শব্দ নির্দিষ্ট মাত্রায় রয়েছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।