‘ওই টাকা আমার নয়!’জেরার মুখে ভেঙে পড়লেন অর্পিতা, জানালেন বিস্ফোরক তথ্য

‘ওই টাকা আমার নয়!’জেরার মুখে ভেঙে পড়লেন অর্পিতা, জানালেন বিস্ফোরক তথ্য

কলকাতা:  এ যেন আলিবাবার গুপ্তধন! তাড়া তাড়া নোটের বান্ডিল৷ তাল তাল সোনা৷ মুঠো মুঠো কয়েন৷ কুবেরের খাজানা দেখে চোখে ধাঁধা লেগে যায়৷ টালিগঞ্জের পর অর্পিত মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্যাট থেকেও উদ্ধার থরে থরে সাজানো ৫০০ ও ২০০০ হাজারের বান্ডিল৷ আর দুই ফ্ল্যাট মিলিয়ে কোটির হাফ সেঞ্চুরি৷ কোথা থেকে এক টাকা? উৎস খুঁজতে ইডি-র ম্যারাথন জেরার মুখে ভেঙে পড়লেন অর্পিতা৷ কেঁদে ফেললেন পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী৷ সেই সঙ্গে বিস্ফোরক দাবি তাঁর৷ 

আরও পড়ুন- পার্থকে বহিষ্কারের করা হোক, দাবি তুলে দিলেন কুণাল! প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্দরের চাপ

বুধবার রাতভর বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট চলে টাকা গোনার কাজ৷ অন্যদিকে, সিজিও কমপ্লেক্সে তখন ইডি-র তদন্তকারী অফিসারদের জেরার মুখে অর্পিতা৷ এই নগদ ৫০ কোটি টাকার মালিক কে? এই টাকার উৎস কোথায়? জবাব পেতে ইডির লাগাতার প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়লেন ‘মিনি ব্যাঙ্ক’- এর মালকিন৷ ইডি সূত্রে দাবি, জেরায় অর্পিতা জানিয়েছেন, এই টাকা তাঁর নয়৷ অর্পিতা বলেন, ‘‘ওই টাকা আমার নয়। ওই ঘরে আমার যাওয়া বারণ ছিল। ওখানে টাকা রাখা হত জানতাম৷ কিন্তু ওখানে এত টাকা ছিল তা জানতাম না।” তিনি জানান, পার্থর কর্মীরাই মাঝেমধ্যে এসে সেখানে টাকা রেখে যেতেন। যেখানে টাকা রাখা হত, সেই ঘরে তাঁর কোনও প্রবেশাধিকার ছিল না৷  অর্পিতার আরও দাবি, তাঁর ফ্ল্যাটে মাঝেমাঝে আসতেন পার্থও। তবে কী আসছে, কোথা থেকে আসছে, তা নিয়ে কিছু জানা ছিল না তাঁর৷ 

এসএসসি নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় বেনজির তল্লাশি চালিয়ে পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। এরপরেই  গ্রেফতার হন অর্পিতা৷ ইডি-র তরফে উদ্ধার হওয়া স্তুপিকৃত টাকার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করা হয়৷ যে দেখে চোখ কপালে উঠেছিল সাধারণ মানুষের। এ যেন টাকার পাহাড়৷ সেই সময় ইডি বলেছিল, এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র৷ আরও টাকা উদ্ধার হবে৷ ইডি-র আইনজীবী ব্যাঙ্কশাল কোর্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, একটা পেঁয়াজ পাওয়া গিয়েছে। খোসা যত ছাড়ানো হবে, ততই তথ্য বেরোবে। ৷ এর পরই বুধবার অর্পিতার বেলঘরিয়ার ৯ তলার ফ্ল্যাটে হানা দেন ইডি-র অফিসাররা৷ উদ্ধার হয় ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা৷ উদ্ধার হয়েছে ৪.৩১ কোটি টাকার সোনা৷ গয়নার চেয়ে বেশি সোনার বাট৷ শুধু ওয়ারড্রোব থেকেই নয়, টাকা উদ্ধার হয়েছে অর্পিতার বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাটের শৌচাগার থেকেও৷ ব্যাগ ও প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে রাখা ছিল ওই টাকা।  

জানা গিয়েছে, কলকাতার এসবিআইয়ের একটি শাখা থেকে টাকা গোনার যন্ত্রগুলি বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ ইডির একটি সূত্রের খবর, প্রথমে টাকা গোনার জন্য পাঁচটি সাধারণ যন্ত্র নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু টাকার পরিমাণ দেখে পরে বড়মাপের যন্ত্র আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।