অর্ণবের সন্ধান মিলতেই ‘গাঢাকা’ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের! ধোঁয়াশা তুঙ্গে

হওড়া: নদীয়া জেলা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের খোঁজ পেতেই গাঢাকা দেওয়ার অভিযোগ অর্ণব রায়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যের বিরুদ্ধে৷ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে অর্ণববাবুর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না বলে অভিযোগ৷ ভেতর থেকে বন্ধ ঘর৷ সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বারংবার শিবপুরের অর্ণববাবুর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন৷ প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অর্ণববাবুকে আগে যাতায়াত করতে

অর্ণবের সন্ধান মিলতেই ‘গাঢাকা’ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের! ধোঁয়াশা তুঙ্গে

হওড়া: নদীয়া জেলা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের খোঁজ পেতেই গাঢাকা দেওয়ার অভিযোগ অর্ণব রায়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যের বিরুদ্ধে৷ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে অর্ণববাবুর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না বলে অভিযোগ৷ ভেতর থেকে বন্ধ ঘর৷

সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বারংবার শিবপুরের অর্ণববাবুর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন৷ প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অর্ণববাবুকে আগে যাতায়াত করতে দেখলেও গত একমাস তাঁকে দেখেননি৷ অর্ণববাবুর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখতেন না বলেও অভিযোগ৷ কিন্তু, জামাইকে ফিরে পাওয়ার পরও হঠাৎ কেন এহেন আচরণ? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ স্বামীর ফিরে আসার বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি WBCS অফিসার অনীশা যশও৷

প্রায় এক সপ্তাহ পর অবশেষে উদ্ধার হয় নিখোঁজ নদীয়া জেলা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব রায়ের খোঁজ পেল সিআইডি৷ হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ আপাতত তাঁকে বিশ্রামের রাখা হয়েছে৷ পরে, তাঁকে জেরা করা হবে৷

গত ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে নদীয়া জেলায় নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার অর্ণব রায়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। জেলার ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কর্মসূত্রে জেলার ১০০ দিনের প্রকল্পের নোডাল অফিসার তিনি।

নিখোঁজ অর্ণবের সন্ধানে তদন্তে নেমে রাজ্য পুলিশ৷ তদন্ত করে সিআইডিও৷ রাজীব কুমার নিজেই এই তদন্তপক্রিয়ায় হাত লাগিয়েছিলেন৷ তাঁর দু’টি মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকলেও পরে শেষ একবার খোলা হয় ফোন৷ সেখানে টাওয়ার লোকেশন অনুসরণ করে সিআইডি আজ তাঁকে হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়৷

অর্ণবের সন্ধান মিলতেই ‘গাঢাকা’ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের! ধোঁয়াশা তুঙ্গেসিআইডি সূত্রে খবর, গত ১৮ এপ্রিলের পর থেকেই তিনি হাওড়ার তাঁতাইতলায় ছিলেন৷ শিবপুরের শ্বশুরবাড়িতেই তিনি ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে৷ কিন্তু, নিজের বাড়িতে স্বামীকে রেখে হঠাৎ কী কারণে তিনি স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অনীশ যশ? তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷ অর্ণবকে অপহরণ করা হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ জানা গিয়েছে, তাঁকে আপাতত বিশ্রাম দেওয়ার পর জেরার প্রক্রিয়া শুরু করবে সিআইডি ও জেলা প্রশাসন৷ গত সাতদিন তিনি কোথায়, কিভাবে কেন নিজেকে আত্মগোপন রেখেছিলেন, তাও জানান কাজ শুরু হয়েছে৷ অর্ণবের স্ত্রী ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের জেরা করা হবে বলেও খবর৷

রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে WBCS অফিসার অনীশা যশ আগেই জানিয়েছিলেন, ‘‘সবার সহযোগিতা পাচ্ছি ঠিকই? কিন্তু, পুলিশকেও আরও বেশি সক্রিয় হওয়া উচিত৷ এতদিন ধরে পাগলের মতো এখানে-ওখানে ঘুরছি৷ অথচ, কেউ কিছুই বলতে পারছেন না৷ কোথায় গেলে, কীভাবে পাব আমার স্বামীর খোঁজ৷’’ এর আগে  কমিশনের তরফে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখানো হলেও তাঁর সাফ জবাব দেন, ‘‘উনি আমার স্বামী৷ সেদিন ওর সঙ্গে ছ’বার কথা হয়েছিল৷ কিন্তু, হঠাৎ যে কী হল…৷’’ কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘আমি করজোড়ে প্রার্থনা করছি, সবাই মিলে চেষ্টা করুন, আমার স্বামীকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন৷ ওর বাবা-মায়ের এক ছেলে৷ ওঁদের খুব কষ্ট হচ্ছে৷ ওঁদের কাছে অর্ণবকে ফিরেয়ে দিন প্লিজ৷ কেউ আমার স্বামীকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন৷’’

কিন্তু অভিযোগ উঠছে, অর্ণববাবু যদি নিখোঁজ হওয়ার পর হাওড়ার শিবপুরে থেকে থাকেন, তাহলে কেন তদন্তের গতিপ্রকৃতি অন্যপথে চালানোর চেষ্টা করলেন WBCS অফিসার অনীশা যশ? ভোটের ডিউটি এড়ানোর জন্য এই পরিকল্পনা, নাকি এই ঘটনার পেছনে অন্যকোনও রহস্য? তা জানতে মাঠে নেমছে সিআইডি৷

অর্ণব রায়ের সন্ধান পাওয়ার খবর পেতেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ৷ এদিন কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলাম নির্বাচন কমিশনকে। কৃষ্ণনগরে আজ বিরাট প্রতিবাদ মিছিল ও জেলাশাসকের দপ্তরে ডেপুটেশন ছিল। প্রশাসনের উপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল। তার মধ্যে অর্ণব রায়ের সন্ধান পাওয়াটা আন্দোলনের জয়। যেকোনও দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে আন্দোলনই যে একমাত্র পথ তা আরও একবার প্রমাণিত হল।’’ অন্যদিকে, অর্ণব রায়ের সন্ধান চেয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বাঁকুড়ায় পথ অবরোধ করে বিজেপি৷ ভোটের কাজে গিয়ে রাজ্য সরকারি আধিকারিকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় বাংলার ভোটকর্মীদের মধ্য তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়৷ এই নিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরে নামে বিরোধীরাও৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − eleven =