বারাকপুর: টানা চারদিন ধরে অশান্ত হুগলীর তেলেনি পাড়া। এলাকায় শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। বুধবার বেলার দিকে সাংসদ অর্জুন সিং এবং সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু জেলাশাসক দেখা করেনি। অভিযোগ, অফিসের নিরাপত্তায় থাকা এক এস আইকে দিয়ে দুই সাংসদকে বলা হয়েছে এডিএমের সঙ্গে দেখা করতে। এরপর সাংসদ অর্জুন সিং এবং লকেট চ্যটার্জি সামাজিক দূরত্ব মেনে জেলাশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। বেলা ১১-৪৫ মিনিট থেকে ১২- ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ চলে।
জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা না পেয়ে ক্ষুব্ধ দুই সাংসদ রওনা দেন তেলেনি পাড়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু চন্দননগর জ্যতির মোড়ে পুলিশ তাদের কনভয় আটকে দেয়। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক অধিকারিক ( এসিপি হেডকোয়াটার্স) দুই সাংসদের কথা বলেন। ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন, পরিস্তিতি একটু শিথিল হলেই সিপি সাহেব দেখা করবেন। যদিও ভদ্রেশ্বর থানায় সিপির সঙ্গে দেখা করতে অনড় ছিলেন দুই বিজেপি সাংসদ। জ্যতির মোড়ে বেলা ১-১৫ মিনিট থেকে ১-৪০ মিনিট ছিলেন দুই সাংসদ। তাদেরকে কাছে পেয়ে নির্যাতিতারা এসে ক্ষোভ উগরে দিলেন। নির্যাতিত মানুষজন বললেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকছে না। দুষ্কৃতীরা অবাধে লুঠপাট করছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। ওরা বোমাবাজি করছে। অভিযোগ, হামলায় মদত দিচ্ছে পুলিশ। অবস্থান বিক্ষোভ সামিল হয়ে সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, জেলাশাসক দেখা করেনি। ওনি এক এস আইকে বলে পাঠিয়েছেন এডিএমের সঙ্গে দেখা করতে। এদিন তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, জেলাশাসককে লোকসভায় প্রিভিলেজ আনা হবে। লোকসভায় সারাদিন দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। যেমন আসামীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, তেমনি ওনাকে লোকসভায় দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। এদিন তিনি পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে দাঙ্গাবাজ আখ্যা দিলেন সাংসদ অর্জুন সিং। তার অভিযোগ, বহিরাগতরা এসে ওখানে হামলা করছে। পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরছে না। উল্টে নিরীহ মানুষদের গ্রেপ্তার করছে। ঘর-বাড়ি ভাঙচুর হয়ে শ্মশানে পরিণত হয়েছে। বাড়ি-ঘর ছেড়ে মানুষজন অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি লোকসভার স্পীকারকে জানানো হয়েছে। সাংসদের দাবি, ওখানে আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। ঘরবাড়িতে লুঠপাট চলছে। অবিলম্বে ওখানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। অপরদিকে সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি বলেন, চারদিন ধরে তেলেনিপাড়া, ভদ্রেশ্বর অশান্ত। প্রশাসন শান্তি ফেরাতে পুরোপুরি ব্যর্থ। জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারকে ফোন করা হয়েছে। ওনারা ফোন ধরেন নি। শুনেছি সিপি নাকি তেলেনি পাড়ায় ক্যাম্প করে বসে আছেন। তাহলে অশান্তি থামছে না কেন? নিশ্চয়ই ওপরতলার ইন্ধন রয়েছে। এদিন পুলিশ কমিশনার ও ভদ্রেশ্বর থানার ওসির অপসারণ দাবি করলেন সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। তার অভিযোগ, ফিরোজ খানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। ঘরবাড়ি লুঠপাট করা হয়েছে। বহিরাগতদের এনে ওখানে তান্ডব চালানো হচ্ছে। অথচ পুলিশ অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেপ্তার করছে না। উল্টে শিক্ষক, স্কুল পড়ুয়া এবং নিরীহ মানুষজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে।