‘অল ইজ ওয়েল বললে হবে না, আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন!’ অনুপমের গলায় এ কোন সুর?

‘অল ইজ ওয়েল বললে হবে না, আত্মবিশ্লেষণ প্রয়োজন!’ অনুপমের গলায় এ কোন সুর?

কলকাতা: রবিবারও ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ঘরওয়াপসি প্রসঙ্গে তৃণমূল সমর্থক দেবাংশুর সঙ্গে  সোশ্যাল মিডিয়ায়  এক চোট তর্কাতর্কি হলেও ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বেসুরো অনুপম হাজরা।  সোম সকালেই একের পর এক বিজেপি নেতার দল ছাড়ার প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে এবার পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বকেই একহাত নিতে দেখা গেল বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদককে। অনুপমের দাবি, দেখতে দেখতে একের পর এক নেতা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপরেও গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বর। ভাবখানা এমন যেন কিছু এসে যায় না। কিন্তু ‘অল ইজ ওয়েল’ কথাটা সিনেমাতেই প্রযোজ্য বাস্তবে সেটা সবসময় খাটে না অনুপমের আত্মসমালোচনার এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসতেই ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আপাতদৃষ্টিতে অনুপম হাজরার এই পোস্টকে আত্মসমালোচনা মনে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু কোথাও একটা খচখচানি থেকেই যাচ্ছে। সেইসঙ্গেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি অর্জুন সিংয়ের এবার পালটি খাওয়ার পালা অনুপম হাজরার?

উল্লেখ্য যতদিন পর্যন্ত ভাটপাড়ার বিজেপি সাংসদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল ততদিন অনুপম হাজরাকেও বারবার দেখা গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধেই কলম ধরতে। সেই সঙ্গে এটাও জানিয়েছিলেন, অর্জুনের মতো নেতৃত্ব দলে থাকল কিংবা গেল তাতে কিছুই আসে যায় না। কিন্তু একের পর এক নেতার দল ছাড়ায় বঙ্গের পদ্ম শিবিরের যে সত্যিই ক্ষতি হচ্ছে সে কথা সোমবার স্পষ্টভাবেই স্বীকার করে নিলেন অনুপম। আর তাই অর্জুনের দলত্যাগের পর পদ্ম শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বদের কটাক্ষ করেই তাঁর মন্তব্য, ‘কেউ দল ছাড়লেন গেলে ‘কোনও ক্ষতি হবে না’ বা ‘গুরুত্ব দিতে নারাজ’ বলে নিজেদের সান্ত্বনা দিয়ে না থেকে  বরং এটা মেনে নেওয়া দরকার যে কেন বারবার এভাবে দল ছাড়লে সকলের ক্ষতি।’ এক কথায় বলতে গেলে  অর্জুন সিংয়ের দলত্যাগের পরে অনুপম হাজরার দাবি, বঙ্গের পদ্ম শিবিরের এবার আত্মবিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে এদিন অনুপমা আরও বলেন, ‘বাস্তবতাকে অস্বীকার করে কোন লাভ নেই। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে একটা কাউন্সিলরের পদ জিততে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে সেখানে কাউন্সিলরেরও যথেষ্ট উপরের পদমর্যাদাসম্পন্ন কেউ দল ছেড়ে চলে গেলে নিঃসন্দেহে সেটা দলের ক্ষতি। ‘অল ইজ ওয়েল’ বলে নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়াটা সিনেমাটা দেখতে ভালো লাগলেও বাস্তবে সেটা সব সময় নাও থাকতে পারে।’

প্রসঙ্গত চলতি বছরের শুরু থেকেই একের পর এক ঘা’ খাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি। মাসখানেক আগেই গেরুয়া বাহিনীর হাত ছেড়ে দিদির হাত ধরেছেন বাবুল সুপ্রিয়। তৃণমূলে যোগ দিয়ে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে তাঁকে মন্ত্রী করা হবে এমন আশ্বাস দিলেও পরে সেই কথা রাখেনি বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মানুক কিংবা না মানুক বাবুল সুপ্রিয় দলের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য ছিলেন। ফলে তাঁর দলত্যাগে বড়সড় ধাক্কা খেতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে একথা বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বরা মুখে না বললেও কাজে-কর্মে ভালভাবেই বুঝে গিয়েছেন। কিন্তু সেই ধাক্কা সহ্য করতে না করতেই ফের দল ছাড়লেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। এইভাবে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দল ছেড়ে চলে যাওয়ায় যে ক্রমশ বঙ্গ রাজনীতি থেকে আরও গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির সেটা অনুপম হাজরার এই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে প্রায় এক প্রকার পরিষ্কার। সেই সঙ্গে মাথাচাড়া দিচ্ছে অনুপমের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নও। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *