কলকাতা: বিশ্বভারতীতে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় রাজ্যের ‘পরিবর্তন’ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। দাবি করেছিলেন যে, বাংলায় পরিবর্তন দরকার। রাজ্যপালের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কারণ, তাঁর মন্তব্যের সঙ্গে মিল রয়েছে বিজেপির ভাবধারার। এই প্রেক্ষিতে এ বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। স্পষ্ট বললেন, রাজ্যপালের রাজনীতি করা সাজে না। রামপুরহাটে দলীয় মহিলা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জনসভা করে তৃণমূল। সেই সভা থেকেই ধনখড়ের ‘পরিবর্তন’ মন্তব্য নিয়ে অনুব্রত জানান, রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর এই মন্তব্য সাজে না। তিনি রাজনীতি করতে পারেন না, সেই অধিকার তাঁর নেই। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, দেশের আইন রাজ্যপালকে রাজনীতি করতে দেয় না, কিন্তু মোদীর আইন দেয়!
আসলে রাজ্যপাল বলেছিলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে অবশ্যই পরিবর্তন আসা উচিত। এক কথায় যে পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে তার পরিবর্তন চেয়েছেন তিনি। এই প্রেক্ষিতে তাঁর সঙ্গে বিজেপির মতের মিল খুঁজে পেয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাই ফের একবার রাজ্যপালের গেরুয়া বাহিনী প্রতি ঝুঁকে থাকার অভিযোগ উঠছে। তবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আদতে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন কিনা সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। মূলত স্বাধীনতার সময়ের কথা বলে তিনি বলেছেন, যখন দেশ স্বাধীন হয় তখন পশ্চিমবঙ্গ যেখানে ছিল আজ সেখানে নেই। ধীরে ধীরে নিচে নেমেছে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতে রাজ্যে পরিবর্তন আসা উচিত। এক্ষেত্রে তিনি সরাসরি বিজেপি বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রসঙ্গে মন্তব্য না করলেও তাঁর কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে যে, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই সন্তোষজনক মনে করছেন না তিনি। সেই প্রেক্ষিতেই দিচ্ছেন ‘পরিবর্তনের’ ডাক।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে বিজেপির পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু মৌখিক অভিযোগ বা বিরোধিতা নয়, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে চিঠি পর্যন্ত দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদরা। এখন ভোট মুখী বাংলায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব যেন আরও বেড়ে চলেছে।