বীরভূম: এক সময় তিনি বলেছিলেন, ‘‘এ আবার নতুন কবি, যে আমার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন৷’’ আজ শঙ্খ ঘোষের মৃত্যুর পর এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, ‘‘শঙ্খ ঘোষ বাংলার কবি৷ তিনি আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন৷ তাঁর আত্মার শান্তি হোক৷’’
আরও পড়ুন- ‘ব্যবসা করার সময় না লোক বাঁচানোর?’ ভ্যাকসিনের দাম প্রসঙ্গে চিঠি লিখবেন মমতা
শঙ্খ ঘোষকে নিয়ে এদিন আর নতুন করে বিতর্কে ইন্ধন জোগানতে চাননি তৃণমূল কংগ্রেসের এই ডাকসাইটে নেতা৷ বরং তিনি বলেন, ‘‘বাংলার একজন ভালো কবি চলে গেলেন৷ এই নিয়ে কোনও বিতর্কিত কথা বলতে রাজি নই৷ পুরনো কথা তুলতে রাজি নই৷ শুধু এটুকুই বলব, আমরা একজন ভালো কবিকে হারালাম৷ ওঁনাকে শতকোটি প্রণাম জানাই৷’’
সময়ের কাটা কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া যাক৷ সালটা ২০১৮৷ সেই সময় পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে তোলপাড়া রাজ্য রাজনীতি৷ বীরভূমে চলছে বেপরোয়া সন্ত্রাস৷ ওই বছর সালের মে মাসে পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রত বলেছিলেন, বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে দেখবেন রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর বীরভূমের ৪২টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ৪১টিতেই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বিরোধীরা৷ এর পরেই গর্জে উঠেছিল কবির কলম৷ ‘মুক্ত গণতন্ত্র’ কবিতায় শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, ‘যথার্থ এই বীরভূমি, উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে পেয়েছি শেষ তীরভূমি। দেখ্ খুলে তোর তিন নয়ন, রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’।
আরও পড়ুন- গুলির শব্দে নয়, নীরবেই নিমতলা শ্মশানে মহাবিদায় কবি শঙ্খ ঘোষের
এর পর হাতে মাইক তুলে পাল্টা হুঙ্কার দিয়েছিলেন অনুব্রত৷ বলেছিলেন, ‘‘শঙ্খ পবিত্র জিনিস৷ কিন্তু শঙ্খ ভুল করলে দেবতার অসম্মান হয়৷ তাই ওঁনার নাম শঙ্খ রাখা উচিত হয়নি৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বড় বড় কথা বলছেন কি৷ এ কোন কবি? আমরা তো কবি বলতে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকেই জানতাম। এ কোন কবি উঠে এসেছেন যে, আমার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন!’’ তাঁর কথায়, কবি বলছেন খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন? দিলীপবাবু যখন বললেন, একশো দেড়শো লোক শ্মশানে যাবে, তখন কি কলমটা বন্ধ হয়ে যায়? উনি একথা বলে ভুল করেছেন৷ আমি ওঁনার ভুল শুধরে দিয়েছি৷