প্রতি তিন মাসে ‘ডিল’ হত ৬ কোটি! ফোনেই ‘ফিক্স’ করতেন অনুব্রত-এনামুল: দাবি সূত্রে

প্রতি তিন মাসে ‘ডিল’ হত ৬ কোটি! ফোনেই ‘ফিক্স’ করতেন অনুব্রত-এনামুল: দাবি সূত্রে

কলকাতা:  গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার বীরভূমে তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ এই মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন গরু পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা এনামুল হক৷ তাঁকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে এসেছে অনুব্রতর নাম৷ মাস দু’য়েক আগে গ্রেফতার হন কেষ্টর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন৷ হদিশ মেলে তাঁর বিপুল সম্পত্তির৷ সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও গরু পাচার মামলার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে সিবিআই-এর৷ মিলেছে একাধিক সূত্রের খোঁজ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, এনামুল আর সায়গলের বয়ান মিলে গিয়েছে। অনুব্রতর সঙ্গে যে টাকা-পয়সা নিয়ে এনামুলের ‘ডিল’ হত, সেই তথ্যও উঠে এসেছে সিবিআই-এর হাতে। 

আরও পড়ুন- সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় আদালতের দ্বারস্থ রাজ্যের মন্ত্রীরা, নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি

গত ফেব্রুয়ারি মাসে গরু পাচার মামলায় এনামুল হককে গ্রেফতার করে ইডি। ইডি হেফাজতের পর তাঁর ঠাঁই হয় তিহার জেলে৷ জেলে রয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলও। তাঁদের দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে সকল তথ্য উঠে এসেছে তা চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে দাবি, গরু পাচার কাণ্ডের শিকড় বিস্তৃত বহু গভীরে৷ ২০১৫ থেকে চলছে গরু পাচারের ‘ডিল’। ওই সময়কাল থেকেই গরু পাচারের ব্যবসা শুরু করেন এনামুল। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এনামুল হকের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি হত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। ফোনেই কথা হত দু’জনের। সিবিআই জেরায় এনামুল জানিয়েছে, গরু পাচারের আগে অনুব্রতর হাতে ‘প্রোটেকশন মানি’ তুলে দিতে হত৷ অঙ্কটা ছিল বেশ বড়৷ তিন মাসে তাঁদের মধ্যে ডিল হত ৬ কোটি টাকা৷ সায়গলের হাতে টাকা তুলে দিতেন এনামুল। সায়গল সেই টাকা পৌঁছে দিতেন অনুব্রতর  কাছে৷ তার থেকে আবার ভাগ পেতেন সায়গলও। এনামুল ও সায়গলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ 

বৃহস্পতিবার বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল৷ মধ্যরাতে তাঁকে নিয়ে আসা হয় নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে৷ শুক্রবার সকাল থেকেই তাঁকে জেরা করা হবে বলে সূত্রের খবর। গরু পাচারের কোটি কোটি টাকা কোথায় যেত, কারা পেতেন সেই টাকার ভাগ? জানতে চাওয়া হবে অনুব্রতর কাছে৷ এত দিন মোট দশবার সমন পাঠানো হয়েছে অনুব্রতকে৷ এর মধ্যে মাত্র একবার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি৷ বাকি ৯ বার তলব এড়িয়ে যান৷ বুধবার ফের তলব এড়ানোর পরেই বৃহস্পতিবার অনুব্রতর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই৷ সকালেই গ্রেফতার করা হয় কেষ্টকে৷