এবার উন্নয়ন নিয়ে কর্মীদের প্রশ্নের মুখে খোদ অনুব্রত, ঠাণ্ডা মাথায় শুনলেন কেষ্টা-দা!

এবার উন্নয়ন নিয়ে কর্মীদের প্রশ্নের মুখে খোদ অনুব্রত, ঠাণ্ডা মাথায় শুনলেন কেষ্টা-দা!

d0cfaf86944bc495380cfe291044a3e0

নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: ক্রমেই জমছে অভিযোগের স্তুপ৷ একসময় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পেতেন সকলেই। দলের জেলা নেতৃত্ব থেকে  কর্মী-সমর্থক সকলের কাছেই রীতিমত ত্রাস ছিলেন অনুব্রত। কিন্তু দিনে দিনে ছবিটা বদলাচ্ছে। বিভিন্ন ব্লকে তৃণমূলের কাজ নিয়ে অসন্তোষ ঘনিয়ে উঠছে দলের মধ্যেই। এলাকার উন্নয়ন থেকে ১০০ দিনের কাজ সব বিষয়ে জমে উঠেছে অভিযোগের পাহাড়৷ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি৷ চলছে ব্লকে ব্লকে কর্মীসভা৷ আর সেই কর্মীসভায় একেকটি বিস্ফোরকের আকার নিচ্ছে৷ দলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে এই দলীয় কর্মী সভাকে কেন্দ্র করে৷ 

তবে অভিযোগ যতটা না রাজ্য নেতৃত্বকে ঘিরে তার থেকে অনেক বেশি স্থানীয় নেতৃত্ব ও পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধে। বিশেষত্ব বুথ কমিটির সভাপতিরা এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন৷ তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের কাজ না করায় এলাকার মানুষ তাদের ভোট দিচ্ছেন না৷ ফলে তারা এলাকায় লিড পাচ্ছেন না৷ আগে নির্বাচনের ফলাফল খতিয়ে দেখে সে বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করে দিচ্ছেন জেলা সভাপতি, ফলত রেজাল্ট খারাপ হওয়ার নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ৷ বুথ কমিটির সভাপতিদের বারবার জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে ফল খারাপ হওয়ার কারণ৷

এমনিতেই একের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তটস্থ থাকেন এমনই অভিযোগ রয়েছে রাজনৈতিক মহলে, তার ওপর জেলা সভাপতির এহেন রেজাল্ট কার্ড ধরে ফল খতিয়ে দেখার বিষয়টিতে স্বভাবতই চাপে আছে বীরভূম জেলা নেতৃত্ব৷ বুথ কমিটির সভাপতিদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানেরা ১০০ দিনের কাজ, পানীয় জলের ব্যবস্থা, রাস্তা সারাই সহ প্রাথমিক কাজগুলি ঠিকমতো না করায় তার প্রভাব পড়ছে নির্বাচনের ফলের ওপর৷

পঞ্চায়েত প্রধান বিরোধী যোগ কাজের সময় বুথ কমিটির সভাপতিদের খুঁজেই পাওয়া যায় না। প্রধানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শানিয়েছেন দলের পঞ্চায়েত সদস্যরাও। তাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানকে কখনও দলের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় বা যোগাযোগ রাখেন না৷

গত ২ সেপ্টেম্বর দলের এক বুথ কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ভয়ানক ক্ষুব্ধ হন অনুব্রত মণ্ডল। নাস্তা সরানোর অভিযোগ নিয়ে তিনি দলের জেলা সভাপতির কাছে অভিযোগ জানাতে হলে পাল্টা তাকে তিরস্কার করেন অনুব্রত। তাকে প্রশ্নে প্রশ্নে জেরবার করেন জেলা সভাপতি।এমনকি উন্নয়ন নিয়ে অনুব্রত সঙ্গে বচসা বেড়ে যায় ওই বুথ কমিটির সভাপতি গণেশ রায়ের। শেষ পর্যন্ত গণেশ বাবুকে বুথ কমিটির সভাপতির পদ খোয়াতেও হয়। রাজনৈতিক মহলের সেইসময় ধারণা হয় এই ঘটনার প্রভাব পড়বে পরবর্তী দলীয় কর্মী সভা গুলিতে। অর্থাৎ দলীয় নেতাকর্মীরা এলাকার উন্নয়ন নিয়ে তেমন অভিযোগে সরব হবেননা জেলা সভাপতির কাছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল বিষয়টি তেমন হলো না। নিজেদের ক্ষোভ জেলা সভাপতির সামনেই উগরে দিলেন দলের নেতাকর্মীরা। এমনকি অনুব্রত সামনেই একে অন্যের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়লেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচন তার আগে দলের ভিতরে এমন অসন্তোষ যে কোনও কাজের কথা নয় তা নিয়ে বিন্দুমাত্র তৃণমূলের দলের অন্দরেই। আপাতত জল কতদূর গড়ায় সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *