বোলপুর: করোনা সতর্কতা বিধি উপেক্ষা করে এবার সিউড়ি দু’নম্বর ব্লকে দলীয় সভা করলেন অনুব্রত মণ্ডল৷ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে ‘মাথামোটা প্রধানমন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি৷ একইসঙ্গে বিধানসভায় ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি হারাতে পারবে না বলেও দিয়েছেন পূর্বাভাস৷ তবে, নির্বাচনের আগে বেশ কিছু নতুন কৌশল তিনি আমদানি করবেন বলেও ঘোষণা করেছেন অনুব্রত৷ কিন্তু, লকডাউনের বিধি ভেঙে কেন জমায়েত করে জনসভা? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলের৷ নিন্দা বিজেপির৷
করোনা সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জমায়েত ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ কিন্তু কোথায় কি? বিধিনিষেধ তোয়াক্কা না করে এবার বিশাল জমায়েত করে জনসভা করে নিজের ক্ষমতা কার্যত জাহির করার চেষ্টা করলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে ‘মাথামোটা’ বলার পাশাপাশি আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশ কিছু নতুন কৌশল তিনি আমদানি করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন৷
কর্মী জমায়েত করে ভাষণ দিতে উঠে অনুব্রত জানিয়ে দেন, ‘‘যাঁরা যেখানে কাজে গিয়েছেন, তারা রাজ্যে ফিরে আসুক৷ তাহলে করোনা বাড়বে না৷ শুনলেন না মাথামোটা৷ মাথামোটা প্রধানমন্ত্রী লকডাউনের আগে শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করেনি৷ এই প্রধানমন্ত্রী ভারতবর্ষকে শেষ করে দিল৷ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিথ্যা কথা বলে৷ একটাও সত্যি কথা বলে না৷ মানুষের কোনও উপকারে লেগে না৷’’ আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নয়া কৌশল আমদানি করার বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডলের মন্তব্য, ‘‘আমরা এবার বিধানসভা কিছু কৌশল পালটাব৷ সেই কৌশল আমি এখানে বলব না৷ চার দেওয়ালের মধ্যে বসে আমরা সমস্ত অঞ্চল প্রেসিডেন্টদের ডেকে এটা বলে দেব৷ নতুন কিছু কৌশল করব৷’’
কিন্তু কর্মী জমায়েত করে কীভাবে জনসভা করলেন অনুব্রত? প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি৷ বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘‘আমরা দেখলাম সিউড়ি দু’নম্বর ব্লকে পুরোন্দপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সভা করেছেন৷ সেই সভা খোলা জায়গায়, উপরে আচ্ছাদন দিয়ে৷ সেখানে বেশ জমায়েত হয়েছে৷ আমরা তো জানি ৫০-৬০ জনের বেশি এক জায়গায় জমায়েত করা যায় না৷ কিন্তু সেখানে কয়েকশো লোক জমায়েত করে তিনি বৈঠক করেছেন৷ আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি, লকডাউন চলাকালীন কীভাবে জমায়েত করে মিটিং করতে পারেন? এটা প্রশাসনের জানা দরকার৷ আমাদের মনে হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস বিধি-নিষেধ উড়িয়ে সভা করলে তাদের সাত খুন মাফ হয়ে যাচ্ছে৷’’
যদিও এর আগে যতবার নির্বাচন এসেছে, ততবার একের পর এক কৌশল নিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল৷ কখনও পুলিশের গাড়িতে বোমা মারার হুমকি দেওয়া, ‘চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজানো’-র নিদান দিয়েছিলেন তিনি৷ গুড়-বাতাসা, নকুলদানার দাওয়াই দিয়েছেন৷ এবার আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনুব্রত মণ্ডল ঠিক কী কৌশল নিয়ে আসেন, তা ভেবেই এখন আতঙ্কে দিন গুনছেন বীরভূম জেলার বাসিন্দাদের অধিকাংশ৷