কলকাতা: ভিন্ন ধর্মে বিবাহ রুখতে বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্য যেমন কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশে লাগু হয়েছে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন। মূলত মুসলিমদের বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তকরণের প্রশ্ন তুলে এই আইন লাগু করা হয়েছে। জানিয়ে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে চরম বিতর্ক। তবে ওই রাজ্যের মত আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গেও এই আইন লাগু হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলে মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরত্তম মিশ্র। তিনি ইঙ্গিত দিলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে তাহলে এই রাজ্যেও লাগু হয়ে যাবে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন। বিজেপি মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে এখন ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
দুর্গাপুরের সভা করতে এসেছিলেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা দুর্গাপুরের বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নরোত্তম মিশ্র। সেখানেই তিনি বলেন, ধর্ম রক্ষার স্বার্থে সম্প্রতি বিজেপি সরকারের লাভ জিহাদ বিরোধী আইন লাগু করেছে। বাংলায় ক্ষমতায় আসার অপেক্ষা, এরাজ্যে ক্ষমতায় এলে এই আইন এখানেও লাভ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বিজেপি মন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর একেবারে হই হই শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনৈতিক মহলে। এই মন্তব্যের ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএম। বাংলার মানুষ যে এই ধরনের মানসিকতা বরদাস্ত করবে না তার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে বিরোধীদের তরফে। প্রসঙ্গত অন্যান্য যে কি রাজ্যে এই আইন লাগু হয়েছে সেখানে বিগত কয়েক দিনেই একাধিক বিতর্কিত ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠে আসছে জেবি না কোনো প্রমাণই বা মাঝে মাঝে কোনো কারণ ছাড়াই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে হেফাজতে নিয়ে নিচ্ছে পুলিশ। ভিন্ন ধর্মে বিয়ে হচ্ছে এমন খবর পেলেই সেখানে হাজির হয়ে যাচ্ছে তারা। সব মিলিয়ে বিতর্কিত এবং জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি এমনটা নয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের বিবাহ একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির এই লাভ জিহাদ বিরোধী আইন প্রসঙ্গ বাংলার মানুষ কিভাবে দেখবেন তা নিয়ে তর্ক হতেই পারে। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, বাংলার মানুষ এই ধরনের মানসিকতার সঙ্গে নিজেদের এখনো সাবলীল করতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাই ভারতীয় জনতা পার্টির এই ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এই রাজ্যের মানুষ কতটা মেনে নেবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। অন্যদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ, মুখে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেও শুধুমাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশানা করার জন্যই এই আইন এনেছে বিজেপি সরকার। এই আইন একেবারেই দেশ বিরোধী এবং সংবিধান বিরোধী।