কলকাতা: কালের নিয়মে বদলে যায় সময়৷ কিন্তু সন্তানহারা বাবা-মায়েদের তীব্র যন্ত্রণা, বুক ফাটা আর্তনাদ, দীর্ঘ শ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা শব্দগুলোর অর্থ কোনও দিন বদলায় না৷ আজ ছাত্রনেতা আনিস খানের বাবা ছেলের মৃত্যুর বিচার চাইছেন৷ প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতার রাজপথ৷ আজ থেকে ঠিক ১৫ বছর আগে এভাবেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল মহানগরী৷ ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর৷ পাতিপুকুর রেল লাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয়েছিল ছেলের রক্তাক্ত দেহ৷ কাঁদতে কাঁদতে ইনসাফ চেয়েছিল রিজওয়ানুর রহমানের মা৷
আরও পড়ুন- ‘CBI তদন্ত চাইলেই বাপ-ছেলেকে খুন’, মাঝ রাতে ফোনে হুমকি আনিসের দাদাকে
আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকে৷ ঠিক একইভাবে রিজওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে উঠেছিল চক্রান্তে সামিল হওয়ার অভিযোগ৷ সুবিচার চেয়ে শুরু হয় আপোষহীন লড়াই৷ যাওয়ার আগে রিজওয়ানু এসএমএসে লিখেছিলেন, ‘মেরে যানে কে বাদ আওয়াজ উঠানা’৷ সমগ্র রাজ্যের মানুষ আওয়াজ তুলেছিল ‘ইনসাফ চাহিয়ে’৷ সেই সময় রাজ্যে ক্ষমতায় সিপিএম৷ আর বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রিজওয়ানুরের মৃত্যুতে পথে নেমেছিলেন তিনি৷ সেই সময় রাজ্যের বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সিবিআই তদন্তে সত্য উঠে আসবে না৷ চাই সিবিআই তদন্ত৷
১৫ বছর পর আজ ক্ষমতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আনিস খানের মৃত্যর তদন্তে তাঁর সরকার গঠন করেছে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)৷ কিন্তু আনিসের পরিবারের দাবি সিবিআই তদন্ত৷ গত শুক্রবার মধ্যরাতে পুলিশের বেশে আনিসের বাড়িতে কারা হানা দিয়েছিল, সেই প্রশ্ন উঠছে৷ ঠিক একই ভাবে রিজওয়ানুর মৃত্যু মামলায় আঁতস কাঁচের নীচে এসেছিল একের পর এক পুলিশ অফিসারের ভূমিকা৷ তৎকালীন বাম জমানার কফিনে যে-সকল ঘটনা পেরেক পুঁতে দিয়েছিল, তার মধ্যে রিজওয়ানুর রহমানের অপমৃত্যু ছিল অন্যতম। যে মৃত্যুতে উঠেছিল পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগ৷ উত্তাল হয়েছিল বঙ্গসমাজের বড় অংশ। শেষ পর্যন্ত রিজওয়ানুর হত্যা মামলায় সিবিআই তদন্ত হয়েছিল৷ কিন্তু আনিসের ক্ষেত্রে কী হবে? সেটাই এখন দখার বিষয়৷ আর কোথাও যেন রিজওয়ানুরের সেই অপমৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আন্দোলনের সঙ্গে আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যু এবং তাকে ঘিরে ছাত্র-আন্দোলনের মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>