কলকাতা: আমতায় ছাত্রনেতা খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য৷ আনিস খানের মৃত্যু খুন না দুর্ঘটনা, তা নিয়ে ঘনীভূত রহস্য৷ নিজের বাড়ির তিন তলার ছাদ থেকে কি নিজেই পড়ে গিয়েছিলেন ছাত্রনেতা? নাকি তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলা দেওয়া হয়েছিল? এই রহস্য উদঘাটন করতে পারে একমাত্র ময়না-তদন্ত৷ এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের৷ কিন্তু ময়না-তদন্তই যদি ‘ঠিকঠাক’ ভাবে না-হয়? এমনই সংশয় প্রকাশ করেছেন আনিসের বাবা সালেম খান। কারণ পুলিশের করা ময়না-তদন্তের রিপোর্টের উপরে একেবারেই ভরসা নেই তাঁদের। পুলিশের প্রতি অনাস্থা থেকেই সিবিআই-কে এই ঘটনার তদন্ত করানোর দাবি তুলেছে তাঁরা৷
আরও পড়ুন- কুয়াশায় ঢাকা মহানগরী, ব্যাহত উড়ান, এ কি শীত ফেরার ইঙ্গিত?
আনিস হত্যা মামলায় ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ডিজি৷ সেই নির্দেশ মতোই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে ঠিক কী ভাবে আনিসের মৃত্যু হয়েছে, তা জানতে ফরেন্সিক বিভাগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রাক্তন এবং বর্তমান পুলিশকর্তাদের একাংশ৷ সেই সঙ্গে এই ঘনার সত্য উদ্ঘাটনে ময়না-তদন্তের রিপোর্টও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে৷ কিন্তু পুলিশের করা ময়না-তদন্তে একেবারেই আস্থা নেই আনিসের পরিবারের৷ আনিসের বাবা সালেম খানের অভিযোগ, তাঁর ছেলের ময়না-তদন্ত নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে৷
সালেম খান বলেন, ‘‘পুলিশ ছেলের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের থানায় যেতে বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, থানা থেকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে ময়না-তদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে যাওয়া হবে। কিন্তু থানায় গিয়ে জানতে পারি আমাদের পৌঁছনোর আগেই পুলিশ আনিসের মরদেহ নিয়ে হাসপাতালে চলে গিয়েছে। ময়না-তদন্ত ঠিক ভাবে হবে কিনা, আমাদের সংশয় রয়েছে। পুলিশ তাদের মনের মতো করে রিপোর্ট তৈরি করবে। ওই রিপোর্টের উপর আমাদের আস্থা নেই।’’
এদিকে পুলিশের বক্তব্য, পুরো প্রক্রিয়াটাই আইন মেনে করা করা হয়েছে। কিন্তু ময়না-তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তদন্তকারীরা। অভি়োগ, শুক্রবার রাতে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক পরে দুষ্কৃতীরা আনিসের বাড়িতে ঢোকে এবং তাঁকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়৷ এদিকে, পুলিশের বক্তব্য, তাঁদের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে কোনও টিম আনিসের বাড়িতে পাঠানো হয়নি। এর পর থেকেই ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা আরও বাড়তে থাকে৷
উল্লেখ্য, উঁচু থেকে পড়লে যে-কারও দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকবে৷ সেটা ময়না-তদন্তের রিপোর্টে ধরা পড়ার কথা৷ এছাড়াও আরও কতগুলি বিষয় রয়ছে৷ কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনার বৈদ্যনাথ সাহা বলেন, “প্রথমত, দেখতে হবে মৃতের দুই হাতে ‘ডিফেন্স উন্ড’ বা আত্মরক্ষার্তে পাওয়া কোনও চোটের চিহ্ন রয়েছে কি না। কারণ, কাউকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলা হলে শেষ মুহূর্তে নিহতের সঙ্গে আততায়ীদের ধস্তাধস্তির সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে নিহতের হাতে আঘাতের চিহ্ন থাকবে। দ্বিতীয়ত, বহুতল থেকে কেউ নিজে যদি ঝাঁপ দিলে দেহ যে দূরত্বে পড়বে, কাউকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা হলে একই দূরত্ব হবে না৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>