কলকাতা: দলের শাস্তির কোপে পড়লেন সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস৷ তৃণমূলের মুখপত্রে লেখার দায়ে ৩ মাসের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করা হল অনিল কন্যাকে৷ দলীয় সূত্রের খবর, এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া আগেই নেওয়া হয়েছিল৷ আজ দলের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়৷
ঘটনার সূত্রপাত, তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলায়’ অনিল কন্যা অজন্তার লেখা উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধ৷ শেষ কিস্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি সিঙ্গুর আন্দোলনকে বাংলার মানুষের গণবিক্ষোভ বলে বর্ণনা করা হয়েছে৷ স্বভাবতই অস্বস্তি বেড়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের ম্যানেজারদের৷ কারণ, ৩৪ বছরের মৌরসী পাট্টা বিনাশে সিঙ্গুরকেই হাতিয়ার করেছিলেন মমতা৷ আজও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো প্রবীন সিপিএম নেতারা মনে করেন, পরিকল্পিতভাবেই সিঙ্গুর থেকে টাটাকে তাড়ানো হয়েছিল৷ স্বভাবতই, প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক৷
কারণ, অজন্তা দলের পার্টি সদস্যও৷ তিনি সিপিএমের অধ্যাপক সংগঠনেরও সদস্য৷ স্বভাবতই, দলের স্থানীয় এরিয়া কমিটির মাধ্যমে অধ্যাপক সংগঠনের তরফে এবিষয়ে তাঁর জবাবদিহি চাওয়া হয়েছিল হয়৷ সম্প্রতি জবাবি চিঠিতে অজন্তা দুঃখপ্রকাশ করে জানান, তাঁর ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের জন্য কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে তিনি দুঃখিত৷ তবে ভবিষ্যতে এই ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে তা তিনি খেয়াল রাখবেন৷
দলের অন্দরের খবর, অজন্তার ঘটনার পুনরাবৃত্তি যে অন্য কেউ করবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়৷ তাই অজন্তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি মূল প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়েছেন বলেই দলের একটি অংশের দাবি৷ ফলে অনিল কন্যাকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তবে সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কোনও পার্টি সদস্য দলবিরোধী কাজ করেছেন, তা হলে তাঁকে প্রথমে শো কজ করা হয়। শো কজের জবাবে সন্তুষ্ট না হলে জল সংশ্লিষ্ট সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়৷ এমনকি সাসপেনশনের পরেও কোনও সদস্য দলবিরোধী কাজ করলে দল তাঁকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করতে পারে বা সরাসরি বহিষ্কার করতে পারে। তবে, সেই কোপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে৷