কলকাতা: বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতেই প্রেস কনফারেন্স ডেকে তাকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠানোর কথা বলেন সৌমিত্র। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সুজাতার পাশে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে অনন্যা স্পষ্ট দাবি করেছেন, ঘর ভাঙ্গা শিখিয়েছে বিজেপি, এটা তাদের কাজ, তৃণমূল কংগ্রেসের নয়। একই সঙ্গে নারী সুরক্ষা এবং নারীর সম্মান প্রসঙ্গে বিজেপিকে তুলোধনা করেছেন ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর অনন্যা।
কলকাতার এক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে অনন্যা জানান, বিজেপি কথায় নারী সুরক্ষা এবং নারীর মর্যাদার কথা বলে। কিন্তু এদিকে দেখা গেল বিজেপির একজন সাংসদ ভরা প্রেস কনফারেন্স ডেকে নিজের স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাচ্ছেন। রাজনৈতিকভাবে মতভেদ এবং সিদ্ধান্ত হতে পারে কিন্তু তা বলে পুরুষতান্ত্রিক অধিকার চাপিয়ে দিয়ে নিজের স্ত্রীকে এইভাবে সকলের সামনে ডিভোর্স এর নোটিশ পাঠানো একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। অনলাইনে কেনাকাটা হয়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনলাইনে পড়াশোনা চলছে, এবার বিজেপি অনলাইন ডিভোর্স দেখালো। অনন্যার কথায়, বিজেপি মুখে তিন তালাক প্রসঙ্গে নারী সুরক্ষার কথা বলে। নারীদের সম্মান দেওয়ার প্রচার চালায়, এদিকে তাদের সাংসদ এইভাবে সরাসরি নিজের স্ত্রীকে সকলের সামনে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠিয়ে অপমান করছেন। এটা কোনভাবেই মানা সম্ভব নয় কারণ এটা অত্যন্ত অপমানজনক এবং লজ্জাজনক ঘটনা। এই প্রসঙ্গে সুজাতা মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্যা দাবি করেছেন, তাঁর পাশে তৃণমূল কংগ্রেস রয়েছে। তৃণমূল নারীদের সুরক্ষা এবং সম্মান দিতে জানে, কিন্তু বিজেপির অন্দরের নারীদের এতোটুকু সম্মান এবং মর্যাদা নেই। সেটা বুঝতেই পেরেছেন সুজাতা মণ্ডল।
নিজের সঙ্গে স্বামী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে অনন্যা বলেন, এর আগে যখন দুজনে একসঙ্গে এনামুল কংগ্রেস করতেন তখন বিজেপি জয়কে বিজেপিতে যোগদান করায়। এক্ষেত্রে তো বলাই যায় ঘর ভাঙ্গা কিন্তু বিজেপি শিখিয়েছে, এখন তারা তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর দোষ দিচ্ছে সৌমিত্র খাঁ এবং সুজাতা মন্ডলের ঘটনার জন্য। কিন্তু ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে দেখা যাবে, ঘর ভাঙ্গার কাজ কিন্তু আদতে বিজেপি শুরু করে। অনন্যার কথায়, কোন রাজনৈতিক দল বাদ দিয়ে সুজাতা মণ্ডল একজন নারী, এটাই তার প্রথম পরিচয়। তাই বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ যা করেছেন তা নারীর মর্যাদা এবং সম্মানের পরিপন্থী। বাংলার মানুষ সব দেখতে পাচ্ছে এবং তারা সব জানেন। এর ফল ভবিষ্যতে বিজেপি ভোগ করবে।