কলকাতা: কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-এর সভার অনুমতি দিতে ফের টালবাহানা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। আগামী পয়লা মার্চ কলকাতার শহিদ মিনারে এনআরসি এবং সিএএ সমর্থনে অমিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেইমত রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। সেনা সহ প্রায় সবরকম ছাড়পত্র মিললেও পুলিশের অনুমতি পাওয়া যায়না।
কলকাতা পুলিশের যুক্তি, যেহেতু মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে সেক্ষেত্রে মাইক-এর অনুমতি দেওয়া সম্ভব হবে না। এই নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।তাঁদের দাবি, পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হয়, এমনভাবে সভা করা হবেনা। পাশাপাশি সেনা বাহিনী মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিলেও রাজ্য সরকার কেন সভা করতে বাধা দিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীলিপ ঘোষ। শুক্রবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে পাশে নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তাঁর অভিযোগ বিজেপির সভা বলেই নানা অজুহাত দেখিয়ে বাতিল করার পথে হাঁটছে কলকাতা পুলিশ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বঙ্গবাসীকে বোঝাতে মার্চের প্রথম দিনই কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শহিদ মিনারে এই আইনের সমর্থনে সভা করার কথা তাঁর। পাশাপাশি তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কর্মসূচিও রয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের। শাহর সভায় সেনাবাহিনীর অনুমতি মিলেছে বৃহস্পতিবারই। ওই দিন লালবাজারের অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছিল বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের তরফে। তবে সেই অনুমতি মেলেনি বলে শুক্রবার লালবাজার সূত্রে খবর।
ওই সময়ে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলবে, তাই সভার অনুমতি দিলে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার যুক্তি দেখিয়ে পুলিশ সভার অনুমতি নাও দিতে পারে, এমন আশঙ্কা ছিলই। কিন্তু বিজেপি নেতাদের যুক্তি ছিল, শহিদ মিনারের আশেপাশে কোনও বসতি এলাকা বা স্কুল নেই। ওইদিন রবিবার, কোনও পরীক্ষা নেই। তাই মাইক বাজলেও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।কিন্তু শুক্রবার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গে পুলিশ কর্তারা বৈঠক করার পর সাফ জানিয়ে দেন, শহিদ মিনারে ওই সময়ে কোনও সভারই অনুমতি দেওয়া যাবে না। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষা চলাকালীন রাজ্যের কোনও প্রান্তেই মাইক বাজানো যায় না। আদালতের নির্দেশও সেই একই। পুলিশ সূত্রে দাবি, সমস্ত আইন মেনেই পয়লা মার্চ অমিত শাহর সভার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে সভা করার বিষয়ে এথনো অনড় রয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।এর আগে বিজেপির সভার অনুমতি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এবার তা কোন পথে গড়ায় সেদিকেই তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক মহল।