কলকাতা: রেশন কিংবা বিদ্যুৎ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যা বলেছেন তা অসত্য, বক্তব্য রাজ্যের অর্থমন্ত্রি অমিত মিত্র'র। কিন্তু, শাহ'র ১১ হাজার কোটি প্যাকেজ নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি মিত্র। রেশন এবং প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা মিলে রাজ্যের জন্য ১১ হাজার কোটি প্যাকেজের কথা বলেছেন শাহ। রেশন বা পিডিএস নিয়ে শাহ'র সমালোচনা করলেও প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণের ৩৫৫৬ কোটি টাকার ব্যাপারে মিত্রের মুখে কিছু শোনা যায়নি। নীচে দেখে নেওয়া যাক, শাহ এবং মিত্রের পারস্পরিক বক্তব্য।
শাহ: বাংলায়, পি ডি এস বা পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম বা রেশন বাবদ ৭.৬৮ কোটি জনতাকে দেওয়া হয়েছে ৩.৮৪ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য। যার খরচ ৮ হাজার কোটি টাকা।
মিত্র: কেন্দ্র দিয়েছে ৬.০১ কোটি টাকা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন দেড় কোটি বাড়িয়ে বললেন? মিথ্যা কথা বলা ওর স্বভাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন মাস ধরে ৪.০৯ কোটি বাংলার মানুষকে খাদ্যশস্য দিচ্ছেন। প্রথমে তো ভুল নম্বর বললেন। তার উপরে মুখ্যমন্ত্রীর অবদানটি ভুলে গেলেন ?
ই্যসু যখন বিদ্যুৎ-
শাহ: বাংলায় ৭.৫ লক্ষ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে মোদি সরকার।
মিত্র: উনি বলছেন, বাংলায় নাকি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে প্রচুর টাকা দিয়েছেন। ২০১১ সালে রাজ্যে ৭৫ লক্ষ গ্রাহক ছিল। এখন ২ কোটি মানুষ বিদ্যুৎ পায়। সম্ভবত একমাত্র অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কারি রাজ্য। 'পাওয়ার কাট' নেই। বেশিরভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছেছে গ্রাম বাংলায়। আমি বলতে চাই, ২০১১ থেকে কেন্দ্র আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা দিয়েছে। অন্যদিকে,২০১১ থেকে আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে রাজ্য ২৭৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
শাহ'র বক্তব্য: বাংলার জন্য ১১ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় প্যাকেজ, দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজে ৩৫৫৬ কোটি টাকা বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছবে, দাবি অমিত শাহ'র। তার উপর পিডিএসে ৮ হাজার কোটি টাকার হিসাব রয়েছে। যা উপরে আলোচিত হয়েছে। মোটের উপর পিডিএস এবং গরিব কল্যাণ প্যাকেজ মিলিয়ে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি বাংলায় পীড়িত মানুষের ঘরে ঘরে সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার দেবে বা দিয়েছে (গরিব কল্যাণ প্যাকেজের কাজ শুরু হয়েছে) বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিত্র'র বক্তব্য: রাজ্যকে কেন্দ্রের ১১ হাজার কোটি প্যাকেজ নিয়ে আলাদা করে অমিত মিত্র'র মুখ থেকে কিছু শোনা যায়নি। তবে, পিডিএসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভুল তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজ নিয়ে কিছু না বললেও পরিযায়ী শ্রমিক এবং অসংগঠিত শ্রমিকদের হাতে নগদ দেওয়া নিয়েই নিজের বক্তব্যে সময় খরচ করেছেন। তিনি বলেছেন, কেন্দ্র ক্ষুদ্র ব্যাবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের হাতে নগদ টাকা দেয়নি। ৩ লক্ষ কোটি লিকুইডিটি ফান্ড – ব্যবসায়ীদের ব্যাংক থেকে ধার করতে হবে। এদিকে ব্যাংগুলি ৬.৩ লক্ষ কোটি আরবিআই – কে ফেরত দিচ্ছে। সরকারের উপর তাদের ভরসা নেই। পরিযায়ী শ্রমিক এবং অসংগঠিত শ্রমিকদের হাতে ফের নগদ দেওয়ার সওয়াল করে অমিত মিত্র বলেছেন, দরকার হলে সাংসদ তহবিল ব্যবহার করা হোক।