Aajbikel

নয়া আতঙ্ক 'অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট'! সালারের ঘটনায় হতবাক গোটা বাংলা! এটাই কি 'এগিয়ে বাংলা'র নমুনা?

 | 
অ্যাম্বুলেন্স

নিজস্ব প্রতিনিধি:  রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ যখন ক্যাম্প করে চলে তখন সেখানে ব্যানারে, ফেস্টুনে বড় বড় করে লেখা থাকতে দেখা যায় 'এগিয়ে বাংলা'। রাজ্য সরকারের প্রতিটি কর্মসূচিতেই চোখে পড়বে 'এগিয়ে বাংলা' স্লোগান। কিন্তু সত্যিই কি বাংলা এগিয়ে রয়েছে? নাকি তাকে টেনে ধরেছে হাজারো দুর্নীতি আর অনিয়ম? যে ঘটনা ফের দেখা গেল মুর্শিদাবাদের সালারে। রোগীকে নিয়ে নিজের পছন্দমত অ্যাম্বুলেন্সে যাওয়া যাবে না। এমন ঘটনাই ঘটেছে সেখানে।

 

শুধু তাই নয়, অন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার সময় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকরা সেটিকে ঘিরে ধরে রোগীর মুখ থেকে মাস্ক খুলে দেয় বলে অভিযোগ। তাই এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় ৪২ বছরের ওই রোগীর। এই ঘটনায় হতবাক গোটা রাজ্য। এ আমরা কোথায় বাস করছি? এতদিন বাড়ি তৈরি করতে গেলে ইট-বালি-সিমেন্ট সিন্ডিকেট চক্রের কথা সবার জানা ছিল। নিজের পয়সায় কেউ বাড়ি করতে গেলেও পছন্দ মতো জায়গা থেকে ইট-বালি-সিমেন্ট কেনা যায় না। সিন্ডিকেটের চোখরাঙানি উপেক্ষা করতে পারেন না কেউ। তাই বেশি দাম দিয়ে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের মাল কিনতে হয় ক্রেতাদের। বহু বছর ধরে এটা চলে আসছে। বিরোধীদের অভিযোগ তৃণমূল সরকারের আমলে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই আবহের মধ্যে এবার দেখা গেল অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট। এটাই কী 'এগিয়ে বাংলা'র নমুনা? সদ্য অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে নিজের পাঁচ মাসের শিশুপুত্রের দেহ ব্যাগে ভরে বাসে করে শিলিগুড়ি থেকে কালিয়াগঞ্জে নিয়ে আসতে হয়েছে হতভাগ্য বাবাকে। কারণ অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দাবিমতো আট হাজার টাকা দেওয়ার সাধ্য ছিল না তাঁর। সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই সামনে এসেছে মুর্শিদাবাদের সালারের এই হৃদয়বিদারক ঘটনা। 

 

এই ধরনের ঘটনা যখন ঘটছে তখন পুলিশ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি করছেন তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। দিনের পর দিন এমন ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দাদাগিরি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সমস্ত ঘটনা জানলেও কোনও ব্যবস্থা নেন না। এমনকী পুলিশ সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে। তার মাসুল গুণতে হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারের মানুষকে। করোনা পরিস্থিতির সময়েও দেখা গিয়েছে অ্যাম্বুলেন্স চালকের দাদাগিরিতে হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে গরিব মানুষকে। খাস কলকাতার বুকে এক শ্রেণির অ্যাম্বুলেন্স চালকরা মাত্র ৫-৬ কিলোমিটার নিয়ে যেতে তখন ৫-৮ হাজার টাকা রোগীর পরিবারের কাছ থেকে নিয়েছেন। তখন বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে সালারের ঘটনা প্রমাণ করল সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু তাতে কী সমস্যার পাকাপাকি সমাধান হবে? এর উত্তর জানতে চান সাধারণ মানুষ। তাই রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে এই অ্যাম্বুলেন্স চক্র দূর করতে প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে সেটাই এখন দেখার।
 

Around The Web

Trending News

You May like