খালি হাতে ফেরাল কেন্দ্র! বাংলার ঝুলি ভরিয়ে ‘মাটির সৃষ্টি’ মমতার

খালি হাতে ফেরাল কেন্দ্র! বাংলার ঝুলি ভরিয়ে ‘মাটির সৃষ্টি’ মমতার

কলকাতা:  কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের বৈঠকের পরেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায় কেন্দ্রের এই প্যাকেজ ‘টোটালটাই বিগ জিরো’৷

তাঁর অভিযোগ, এই প্যাকেজে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি৷ কর্মসংস্থানের কথাও বলা হয়নি৷ তাঁর প্রশ্ন, কেন্দ্রের প্যাকেজে করোনা মোকাবিলায় বরাদ্দ কোথায়? কেন কৃষি ঋণ মুকুব করা হল না? মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্যগুলিকে  একটা টাকাও দেওয়া হল না৷ বিপদে পড়া মানুষগুলোর জন্য কোনও ঘোষণা নেই৷ আসলে কেন্দ্রের প্যাকেজ আইওয়াশ। দুর্ভোগের সময় মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ এই প্রকল্প বিভ্রান্তিকর৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র আমাদের বঞ্চিত করলেও আমরা সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি৷ দুর্যোগ আসবে, দুর্যোগ চলেও যাবে৷ কিন্তু উৎসব থেমে থাকবে না৷ তাই ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৪,২০০ টাকা অ্যাড হক বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ গত বছরের তুলনায় ২০০ টাকা বাড়ানো হল চলতি বছর৷ অন্যদিকে, ফেস্টিভাল অ্যাডভান্স বাবদ গত বছর দেওয়া হয়েছিল ৮ হাজার টাকা৷ এই বছর ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে৷ ১০ লক্ষ সরকারি কর্মচারী বোনাস এবং ফেস্টিভাল অ্যাডভান্সে উপকৃত হবেন৷ এজন্য বাড়তি ৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্যের৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র শূন্য হাতে ফেরালেও, মানবিক মুখ দেখাতে পেরেছে রাজ্য৷ 

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার থেকে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ ১৫ শতাংশ টাকা পাবে৷ এই টাকা ইতিমধ্যেই দেওয়া শুরু হয়েছে৷ বাংলার আবাসিক যোজনায় গ্রাম বাংলায় ১০ লক্ষ বাড়ি তৈরি ছাড়পত্র দিতে চলেছে রাজ্য৷ ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়া হবে৷ যাতে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের আরও বেশি করে কাজ দেওয়া যেতে পারে৷ ১০০ দিনের কাজে লোকবল বাড়ানোর উপর জোড় দেওয়া হয়েছে৷ 

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৫০ হাজার একর জমিতে পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প শুরু করা হচ্ছে৷ এই প্রকল্প থেকে গ্রাম বাংলার আড়াই লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন৷ ইতিমধ্যেই সাড়ে ৬ একার জমিতে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে৷ পরিবেশ বান্ধব এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাটির সৃষ্টি’৷  বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রথম এই প্রকল্পের কাজ চালু করা হবে৷ 
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই জেলাগুলিতে অনেক জমি পড়ে আছে৷ কিন্তু এখানকার মাটি রুক্ষ হওয়ায় তা চাষের উপযুক্ত নয়৷ এই ৫০ একর অনুর্বর জমিতেই গড়ে তোলা হবে মাছ চাষ, পশু পালনের মতো একাধিক প্রকল্প৷ 

করোনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাইরে থেকে বহু মানুষ রাজ্যে ফিরছে। ৪টি গ্রিন জোন অরেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। অরেঞ্জ জোনগুলিকে গ্রিন জোনে ফেরানোই এখন চ্যালেঞ্জ। লকডাউন ওঠার পর প্রত্যেক জেলায় বিশেষ সমীক্ষা করা হবে। প্রতিটি জেলায় সেন্টিনেল সার্ভে করা হবে। দেশের মধ্যে বাংলাই প্রথম রাজ্য হিসেবে এই পদক্ষেপ করছে। আমরা আত্মনির্ভর হতে পেরেছি৷ ৪৫ লক্ষ মাস্ক, ৭.৫ লক্ষ পিপিই তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যে ১৩.২ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। – ফাইল ছবি, সিঙ্গুর৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *