কলকাতা: গড়িয়া মহাশ্মশানে বেওয়ারিশ লাশ বিতর্ক ঘিরে যখন চড়ছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত, ঠিক তখন, মর্গে দেহের চাপ কমাতে সমস্ত মৃতদেহের করোনা পরীক্ষা নয় বলে সিদ্ধান্ত নিল এনআরএস রোগী কল্যাণ সমিতি৷ একই সঙ্গে সাফ জানিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে, নিশ্চিত না হয়ে কোনও মৃতদেহের করোনা পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না চিকিৎসকরা৷
এবার থেকে সমস্ত মৃতদেহের করোনা পরীক্ষা করা হবে না৷ কারণ রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে৷ মৃত দেহের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ার কারণে দিনে দিনে মৃতদেহ জমছে মর্গে৷ দিনের পর দিন মর্গে মরদেহ জমে থাকায় পরিবারের হাতে তা তুলে দিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷ আর সেই সমস্যা সমাধানে এবার করোনা পরীক্ষা ছাড়াই মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে এনআরএসের রোগী কল্যাণ সমিতি৷ তবে সেক্ষেত্রেও রয়েছে বেশ কিছু বিধিনিষেধ৷
এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোনও ব্যক্তির যদি মৃত্যু হয়, তাহলে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করা হবে না এতদিন পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল, চিকিৎসকরা শুধুমাত্র সন্দেহের বশে মৃতদেহগুলির করোনা পরীক্ষার সুপারিশ করেছিলেন৷ নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হতো৷ ওই রিপোর্টে পজেটিভ হলে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হত না৷ চলে যেত পুরসভার হাতে৷ পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে দেহ পেতেন পরিবারের সদস্যরা৷
কিন্তু, তাতেও ছিল নানন জটিলতা৷ গোটা এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ৭-১০ দিনের বেশি সময় লেগে যাচ্ছিল৷ ফলে দীর্ঘ সময় ধরে মৃতদেহ জামা পরছিল মর্গে৷ চাপ বাড়ছিল মৃতদেহের৷ সেই চাপ কমাতে এবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে চিকিৎসকরা নিশ্চিত না হলে, তাঁরা কোনও মৃতদেহের করোনা পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না৷ চিকিৎসকদের বলে দেওয়া হয়েছে, যদি করোনা পরীক্ষা লিখতেই হয়, তাহলে নিজেদের নিশ্চিত হতে হবে, ওই রোগীর করোনায় মৃত্যু হয়েছে৷ তারপরই তাঁরা করোনা মৃতদেহের সার্টিফিকেটে করোনা লিখতে পারবেন৷ আর সাধারন কোনও মৃত্যুর ক্ষেত্রে রোগীর করোনা পরীক্ষা সুপারিশ করা যাবে না৷
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এই মর্মে বিভাগীয় প্রধান দের কাছে রোগী কল্যাণ সমিতির তরফে বিস্তারিত নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এভাবে মৃতদেহের করোনা পরীক্ষা না করে পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকেই৷ সেক্ষেত্রে যদি কোনও মৃতদেহে করোনা থাকে, তাহলে পরিবারের সদস্যরা সংক্রমিত হবেন না তো? থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন৷