হাওড়া: হাওড়ায় কয়েক মাসের মধ্যে ৪টি এটিএম লুঠ হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার আবারও ঘটল এটিএম লুঠের ঘটনা। আগের লুঠের মতো প্রায় একই কায়দায় এদিন এটিএম লুঠের ঘটনা ঘটল। এটিএমের শাটার খুলে গ্যাসকাটার দিয়ে এটিএম ভেঙ্গে লুঠ হয় লক্ষাধিক টাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি উত্তর অংশুমান সাহা সহ লিলুয়া থানা এবং হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকরা। সিসিটিভির ফুটেক দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে লিলুয়া থানা এলাকার কোনা মোড়ের কাছে দক্ষিণ খালিয়ায়।
গত কয়েকমাস ধরে হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় চলছে ‘সিরিয়াল’ এটিএম লুঠের ঘটনা। ২০১৮ সালের ৩রা আগস্ট লিলুয়ায় ২টি, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই বেলেপোলে ও ২০ ডিসেম্বর বেলগাছিয়ায় একটি এটিএম লুঠের ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালের জানুয়ারীতে আন্দুলে এটিএম লুঠ হয়। বারেবারে এমন চুরির ঘটনা ঘটায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন এরপরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মিটিংয়েও বসে। সেই মিটিংয়ে এটিএমগুলিতে রক্ষী রাখার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ফেরেনি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ চুরি যাওয়া ওই এটিএমে কোন নিরাপত্তারক্ষী ছিলনা।
এদিন স্থানীয় বাসিন্দা ভোলানাথ মন্ডল জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ সকালে বাইরে বেড়িয়ে দেখেন শাটার খোলা। ভেতরের মেশিন ভাঙা। তাঁর অনুমান গ্যাস কাটার দিয়ে মেশিনটি কাঁটা হয়েছে। এই অবস্থা দেখে পুলিশকে খপবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। এই এটিএমে কোন নিরাপত্তারক্ষী নেই বলে অভিযোগ তাঁর।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি ট্রাফিক অংশুমান সাহা জানিয়েছেন, এটিএম থেকে প্রায় ২১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা লুঠ হয়েছে। দুষ্কৃতীরা শাটার খুলে গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম ভেঙে টাকা লুঠ করে টাকা। অপারেশনের আগে দুষ্কৃতীরা সিসিটিভির তার কেটে দিয়েছিল। আগের চুরির ঘটনায় যুক্তরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মামলার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তরা দ্রুত ধরা পড়বে বলে দাবি তাঁর। যাতে এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী রাখা হয় সে ব্যাপারে আবারও অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি দল এই এটিএম লুঠের কাজ করে আসছে। এরা এই কাজে অত্যন্ত দক্ষ। একই সঙ্গে এরা একাধিক জায়গায় অপারেশন চালায়। এটিএমের ভিতর এবং বাইরেই শুধু নয়, পাশাপাশি নিকটবর্তী এবং দূরবর্তী এলাকায় বিভিন্ন সিসিটিভির ফুটেজ জোগাড় করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই এটিএম লুঠের ঘটনায় তিন থেকে চারজন যুক্ত ছিল। এরা চার চাকা গাড়িতে করে এসেছিল। একজন গাড়ি চালাচ্ছিল। বাইরে একজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিল। এবং এটিএমের ভিতরে ঢুকেছিল দুজন। এদের সনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।