খবর প্রকাশ হতেই বিভীষণ হাঁসদার দুয়ারে পৌঁছলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা

খবর প্রকাশ হতেই বিভীষণ হাঁসদার দুয়ারে পৌঁছলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা

e9a4a637766d654c6e3e19800b531c41

বাঁকুড়া: সংবাদ মাধ্যমের খবরের জের৷ রবিবার বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের প্রান্তিক মানুষ বিভীষণ হাঁসদার অসহায়তার খবর প্রকাশ হওয়ার পর সোমবার স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ তার গ্রামের বাড়িতে যান। মেয়ের  প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইনসুলিন দিয়ে সাহায্য করার পাশাপাশি আগামী দিনেও পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা।

তবুও এতো সবের পরেও ভরসা পাচ্ছেন না অসহায় বিভীষণ হাঁসদা। ‘‘হয়তো ক’দিন পরে আবারও সব বন্ধ হয়ে যাবে। তখন কি করবেন’’ এই ভেবে ফের চোখে মুখে আশঙ্কার মেঘ জমা হচ্ছে তাঁর৷ কারণ, কেউ কথা রাখেনি! আর তাই সংসার চালিয়ে ‘অসুস্থ’ মেয়ের চিকিৎসা খরচ চালাতে হিমশিম অবস্থা বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের বিভীষণ হাঁসদার।

এক বছর আগে ভোটের সময় রাজনৈতিক প্রচার সফরে এসে প্রান্তিক আদিবাসী সমাজের এই মানুষটির মাটির দাওয়ায় বসে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ্। আর সেই সৌজন্যে সংবাদ শিরোনামে আসেন প্রত্যন্ত গ্রামের এই মানুষটি। অমিত শাহ্ ফিরে যাওয়ার পর ঘনঘন যাতায়াত বাড়ে শাসক তৃণমূল থেকে বিরোধী বিজেপি নেতাদের। বিভীষণ হাঁসদার ‘অসুস্থ’ মেয়ে রচনা হাঁসদার যাবতীয় চিকিৎসার খরচ চালানোর অঙ্গীকার করে তৃণমূল- বিজেপি দু’পক্ষই। মিডিয়াতেও সেকথা ফলাও করে প্রচার হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। মিডিয়ার ফ্ল্যাশ লাইটের আলো সরে যেতেই সব পক্ষের সব প্রতিশ্রুতি ফাঁকা আওয়াজে পরিনত হয়েছে বলে অভিযোগ।

অমিত শাহ্ যে মাটির দাওয়ায় বসে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন ঠিক সেই জায়গাতে বসেই অসহায় বিভীষণ হাঁসদা বলেন, এখন স্বামী-স্ত্রীর যৌথ রোজগারে কোন রকমে সংসার চলে। মেয়ের চিকিৎসা বাবদ খরচ প্রতি মাসে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। অমিত শাহ্ ফিরে যাওয়ার পর তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই মেয়ের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তৃণমূলের তরফে মাত্র একমাস ওষুধ দিলেও ‘সরবরাহ নেই’ অজুহাত দিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির ডাঃ সুভাষ সরকার চার মাস ওষুধ সরবরাহ করলেও এখন তা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।  এমনকি অমিত শাহ্ ‘বাইরে নিয়ে গিয়ে’ মেয়ের চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণ করা হয়নি বলে বিভীষণ হাঁসদা দাবি করেন।

 বিভীষণ হাঁসদার মেয়ে,  বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী রচনা হাঁসদা বলেন, বাবা-মা খুব কষ্ট করে আমার পড়াশুনা ও চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছেন। মূলতঃ সুগারের সমস্যায় সে দীর্ঘদিন ভুগছে। এই অবস্থায় সরকারি সাহায্য খুব জরুরি বলে সে জানায়। বিভীষণ হাঁসদার বৃদ্ধা মা ফুলমনি হাঁসদা বলেন, ‘সবাই বলেছিল পাশে থাকব, এখন কেউ নেই’। তাঁর ছেলে ভীষণ কষ্ট করে সংসার ও চিকিৎসা চালাচ্ছে বলে তিনি জানান। তবে এদিন প্রশাসনের তরফে কর্তাব্যক্তিরা পাশে এসে দাঁড়ানোয় সংবাদ মাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হাঁসদা পরিবার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *