কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুরের ‘অধিকারী গড়’ কাঁথিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী নাম না নিয়ে কার্যত বেলাগাম আক্রমণ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছাড়ার কারণ। শুভেন্দুর ‘ভাইপো’ নাম নিয়ে বারবার আক্রমণ করা নিয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। মেদিনীপুরের ভূমিপুত্রকে কটাক্ষ করে তিনি এদিন বলেন, ‘চার আনার নকুলদানা, তার আবার ক্যাশমেমো।’
শনিবার প্রায় ছয় বছর পর কাঁথিতে সভা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই মঞ্চ থেকেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে একের পর এক আক্রমনাত্মক মন্তব্য ছুঁড়ে দেন তিনি। জানান শুভেন্দুর তৃণমূল ছাড়ার কারণও। জেলা পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরিয়ে দিতেই ‘রাগ’ হয়েছে শুভেন্দুর। আর সেজন্যই ‘সাত তাড়াতাড়ি’ বিজেপিতে গিয়ে নাম লেখালেন তিনি। এমনটাই বক্তব্য অভিষেকের।
কাঁথিতে তিনি এদিন জানালেন, ‘‘ওনার কেন এত গাত্রদাহ হচ্ছে তা কী আমি বুঝি না? অবজারভার পদ থেকে তুলে দেওয়ার জন্যই রাগ হয়েছে। উনি পূর্ব মেদিনীপুর, মুশিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও মালদহের অবজারভার পদে ছিলেন। এ জেলার ১৬টি বিধানসভার আসন, মুর্শিদাবাদের ২২টি, উত্তর দিনাজপুরের ১২টি, মালদহের ৯টি বিধানসভা আসন ওনার হাতে ছিল। উনি ভেবেছিলেন এখান থেকে ৩০-৩৫টি সিট নিয়ে সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেবেন। ওনাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। কিন্তু সে গুড়েবালি। আর তাতেই এত রাগ।’’
এদিন অভিষেক শুভেন্দুর ‘পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে আক্রমণেরও তুমুল নিন্দা করেন। বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই প্রাক্তন নন্দীগ্রামের বিধায়কের তৃণমূলকে আক্রমণের অন্যতম হাতিয়ার পরিবারতন্ত্র নিয়ে খোঁচা। তার জবাবে এদিন অভিষেক কটাক্ষ বলেন, “এখানে তো অধিকারী এন্ড কোম্পানি সবটা নিয়ে বসেছিল। একটা পরিবারে এতগুলো পদ।” সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র শুভেন্দুকে খুল্লামখুল্লা চ্যালেঞ্জ দিয়ে অভিষেকের হুংকার, “ফেসবুকে ভিডিয়ো ছেড়ে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। শান্তিকুঞ্জের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। হিম্মত থাকলে যা করার করে নিও। চার আনার নকুলদানা, তার আবার ক্যাশ মেমো।”
তিনি আরও বলেন, “এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে গিয়েছেন এখানে। তিনি নিজেই নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়ে দাঁড়াবেন। আর নন্দীগ্রামের মানুষই তাকে নির্বাচিত করবেন।” মেদিনীপুরকে ‘অধিকারী গড়’ বলতে নারাজ তৃণমূল নেতা। তীব্র আপত্তি জানিয়ে বললেন, “অধিকারী গড় আবার কি? এটা জেলার মানুষের গড়।”