কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে এবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের ঠিকানায় গিয়ে সাংসদ স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে নোটিস পাঠাল সিবিআই৷ অভিষেকের স্ত্রীর নামে নোটিস দিতে কালীঘাটে যান সিবিআই ৫ আধিকারিক৷ সূত্রের খবর, বাড়িতে তখন কেউ ছিলেন না৷ প্রায় মিনিট ২০ থাকার পর সিবিআইয়ের আধিকারিকরা নোটিস দিয়ে ফিরে যান৷ কয়লাকাণ্ডে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু তথ্যের প্রয়োজন রয়েছে বলে সিবিআইয়ের তরফে আইপিসি ১৬০ ধারায় নোটিস পাঠানো হয়েছে৷ সিবিআইয়ের এই নোটিসের পর টুইটারে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷
কয়লাকাণ্ডে তদন্তে নেমে একাধিক প্রভাবশালী যোগ পেয়েছে সিবিআই৷ রাজ্যে কয়লা পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা বেপাত্তা৷ লালাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সিবিআই৷ লালার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে যুব তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রের নাম পেয়েছে সিবিআই৷ বিনয় মিশ্রকে ফেরার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ এই নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে কম বিতর্ক হয়নি৷ এবার তদন্তে নেমে সরাসরি সিবিআই নজরে খোদ তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের পরিবার! ভোটের আগে সিবিআইয়ের এহেন তৎপরতা ঘিরে তৈরি হয়েছে তুমুল বিতর্ক৷
আজ রবিবার দুপুরে কালীঘাটে অভিষেকের ঠিকানায় পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারীকরা৷ সিবিআইয়ের ৫ আধিকারীক তৃণমূল সাংসদের ১৮৮ ‘শান্তিনিকেতনে’ গিয়ে নোটিস দেওয়ার চেষ্টা করেন৷ তবে, সেই সময় বাড়িতে অভিষেক-স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না বলে খবর৷ কয়লা পাচারকাণ্ডে অভিষেকের স্ত্রী রুজিরার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে সিবিআইয়ের৷ সাক্ষী হিসেবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা৷ তবে,নিজাম প্যালেসে হাজিরা নয়, বরং কালীঘাটের বাড়িতে বসেই সাংসদ-স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা৷ তবে, নোটিস দেওয়ার তৎপরতা চললেও সাংসদ-স্ত্রীকে তলব করা হয়নি৷ সিআরপিসির ১৬০ ধারায় নোটিস সিবিআইয়ের৷
সিবিআইয়ের নোটিস প্রসঙ্গে টুইটারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘‘আজ দুপুর ২টোর সময় আমার স্ত্রীর নামে নোটিস দিয়েছে সিবিআই৷ দেশের আইনের প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে৷ যদি কেউ মনে করেন, আমাদের ভয় দেখাবে, তাহলে ভুল করছেন৷ আমরা কখনও মাথা নত করি না৷’’ সঙ্গে টুইটারে দিয়েছেন সিবিআইয়ের পাঠানো নোটিসের প্রতিলিপি৷
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহে ভোটের দিন ঘোষণা হতে পারে। ভোটের দিন ঘোষণার আগে খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শান্তিনিকেতনে’ সিবিআইয়ের হাজিরা, নতুন করে তৈরি করেছে বিতর্ক৷ যদিও, এর আগে একাধিক জনসভা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা বিজেপির সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তোলাবাজির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে ফাঁসির মঞ্চে উঠে মৃত্যুবরণে রাজি তিনি! ভোটের মুখে রাজনৈতিক কারণে সিবিআইকে ব্যবহার করছেন অমিত শাহ৷ বাংলার মানুষ এর জবাব দেবেন, সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ একই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতারের দাবিও তুলেছেন কুণাল৷ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবি, “বিনয় মিশ্রকে অভিষেক সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন৷ বিনয় মিশ্র এখন ফেরার৷ এর জবাব দিতে হবে অভিষেককে৷ সিবিআই যাবেই৷ শেষ পর্যন্ত যেন দেখতে না হয় ভোটের মুখে ভাইপোকে ওড়িশায় থাকতে হয়৷’’