কলকাতা: করোনা কালে দেশ জুড়ে যে আর্থিক বিপর্যয় নেমে এসেছিল, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আমফান দুর্যোগের বিধ্বংসী তান্ডব। রাজ্যের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। সেই থেকে রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পেয়ে আসছেন মানুষ। তবে এবার রেশন গ্রাহকদের প্রতি খাদ্য দফতরের তরফ থেকে পাঠানো হয়েছে এক নতুন নির্দেশিকা।
প্রত্যেক রেশন গ্রাহকের আধার ও মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল আগেই। এবার তা সংশ্লিষ্ট রেশন দোকানের ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেলস (ই-পস) যন্ত্রে যাচাই করতে হবে, এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারের খাদ্য দফতর। বস্তুত, রেশন দোকানগুলিতে ই-পস যন্ত্রে গ্রাহকদের ডিজিটাল রেশন কার্ড স্ক্যান করে খাদ্য বন্টনের কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। কিন্তু এতদিন মোবাইল ও আধার নম্বর যাচাই করা হচ্ছিল না। এবার খাদ্য দফতরের তরফ থেকে সেই নির্দেশিকাই জারি করা হয়েছে রেশন গ্রাহক তথা বন্টনকারীদের উদ্দেশ্যে।
কেন গ্রাহকদের আবার নতুন এই নির্দেশ? জানা গেছে, রেশন বন্টন ব্যবস্থায় দুর্নীতি রুখে পরিষেবায় স্বচ্ছতা আনতেই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রেশন গ্রাহকদের মোবাইল ও আধার নম্বর যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য দফতর। তবে তার ফলে যাতে কোনোভাবেই কোনো গ্রাহক খাদ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন, সে বিষয়েও কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে কড়া নির্দেশিকা।
খাদ্য দফতর জানিয়েছে, আঙুল ছাপের মাধ্যমে খুব সহজেই ই-পস যন্ত্রে আধার নম্বর যাচাই করা যাবে। এভাবেই রেশন গ্রাহকের পরিচয় যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে আশাবাদী কর্মীরা। কিন্তু কোনো কারণে এই প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দিলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে মোবাইল নম্বর ব্যবহৃত হবে। সেই পদ্ধতিও বিশেষ জটিল নয়। সূত্রের খবর, রেশন কার্ড ই-পস যন্ত্রে স্ক্যান করলে গ্রাহকের নথিভুক্ত মোবাইল নম্বরে ওটিপি আসবে। গ্রাহকের ফোন থেকে সেই নম্বর সংশ্লিষ্ট যন্ত্রে টাইপ করলেই পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে প্রায় ১০ কোটি ডিজিটাল রেশন কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। খাদ্য দফতরের এই নতুন নির্দেশিকা ভালো চোখে দেখছেন না রেশন ডিলাররা। সরকারি নির্দেশিকায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।