কলকাতা: বাংলার মিষ্টিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একজোট হল রাজ্যের বড় বড় মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠানগুলি। আসন্ন নির্বাচনের মুখে বাঙালি-অবাঙালির লড়াই এখন রাজনৈতিক ময়দান ছাড়িয়ে মিষ্টি শিল্পেও। বৃহস্পতিবার কলকাতায় বাইপাসের ধারে এক হোটেলে অনুষ্ঠিত হল ‘মিষ্টি উদ্যোগ’-এর প্রথম বার্ষিক আলোচনা সভা। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি তথা কে সি দাসের কর্ণধার ধীমান দাস, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন।
বাংলার মাটিতে যেমন অবাঙালি ‘বহিরাগত’দের টেক্কা দিচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরেও তেমন অবাঙালি ‘নমকিন’ মিষ্টিকে দশ গোল দেওয়ার চেষ্টায় গ্রামবাংলার রসালো মিঠাই। সেই উদ্দেশ্যে এবার রাজ্যে গড়ে তোলা হবে মিষ্টি তৈরি প্রশিক্ষণের জন্য কলেজও। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কলেজের জন্য জমি নিয়ে কথাবার্তাও চলছে বলে এদিন জানিয়েছেন কে সি দাস মিষ্টান্ন ভান্ডারের কর্ণধার ধীমান দাস।
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের বাজারে মিষ্টি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজ্য সরকারকেও। ধীমানবাবু জানিয়েছেন, “লকডাউনে যখন সবকিছু বন্ধ ছিল তখন দুধ উৎপাদনের পরেও তা ফেলে দিতে হত। প্রচুর মিষ্টি নষ্ট হয়। অতিরিক্ত দুধ ফেলে দিতে হয় বললেন ও সমুদ্রে। কারণ, কোনও মিষ্টির দোকানে সেই দুধের চাহিদা ছিল না। গ্রামবাংলা থেকে এই খবর আমার কাছে এলেই আমি শুভাদা’র মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে বিষয়টা জানাই। মু্খ্যমন্ত্রীর সেই সময়ে তৎপরতা দেখিয়ে দিনে অন্তত ৪ ঘন্টার জন্য সব মিষ্টির দোকান খোলার ব্যবস্থা করেন। সেজন্য আমি তার কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।”
অন্যদিকে, এই প্রথম সর্বভারতীয় মিষ্টান্ন সংগঠন ‘এফএসএনএম’-এর সঙ্গে যুক্ত হল রাজ্যের সংগঠন ‘মিষ্টি উদ্যোগ’। আগে রাজ্যস্তরে মিষ্টির দোকানগুলির সংগঠন থাকলেও তার বিশেষ কার্যকরী ছিল না। তাই এবার বাংলার মিষ্টিকে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দিতে এগিয়ে এল তরুণ প্রজন্ম। এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত না হয়েও হঠাৎই হাজির হন রাজ্যের তৃণমূল মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ওই হোটেলেই অন্য একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময়ে পথ ভুল করে তিনি মিষ্টির গন্ধে গন্ধে পৌঁছে যান ‘মিষ্টি উদ্যোগ’-এর অনুষ্ঠানে। সেখানে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে মিষ্টি খেয়ে তিনি বাংলার মানুষকে বলেন, “মিষ্টি খান আর মিষ্টি কথা বলুন।” বিমানবাবুকে মিষ্টি খাইয়ে ইয়ার্কি মেরে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বললেন, “বিধানসভায় এবার থেকে আমায় একটু কম বকবেন।”