নয়াদিল্লি: দিল্লি জাহাঙ্গিরপুরীর অশান্তির সঙ্গে নাম জড়াল বাংলার৷ সেদিনের গণ্ডোগোলের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ধৃতদের মধ্যে রয়েছে সুখেন সরকার, সুরেশ সরকার, সুখেনের শ্যালক সুজিত৷ এমনটাই এএনআই সূত্রে খবর৷ দিল্লির অশান্তির সঙ্গে এদের যোগ রয়েছে বলেই পুলিশের দাবি৷ যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ধৃতের স্ত্রী৷
আরও পড়ুন-রাজ্যের কাছে পাঁচটি ধর্ষণ মামলার রিপোর্ট ও কেস ডায়েরি তলব করল হাই কোর্ট
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের ১৪টি টিম তদন্তে নেমেছে৷ সোমবার ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা৷ এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড মহম্মদ আনসারের সঙ্গে আগেই বাংলার যোগ মিলেছিল৷ এবার তা আরও দৃঢ় হল৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আনসারের বাড়ি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায়৷ ঘটনার তদন্তের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দিল্লি পুলিশ৷ রাজ্য পুলিশকে হলদিয়ায় তদন্ত চালানোর কথা বলা হয়েছে৷
উল্লেখ্য, দিল্লিতে থাকলেও লকডাউনের সময় হলদিয়াতেই ছিলেন আনসার৷ অভিযোগ, দিল্লিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে এসেছিলেন তিনিই৷ ঘটনার তদন্তে বাংলায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে দিল্লি পুলিশ৷ দিল্লির অশান্তিতে এখনও পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে দুই নাবালক৷ এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে উঠে এসেছে সোনুর নাম৷ যার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়৷ যেখানে নীল রংয়ের একটি শার্ট পরে গুলি চালাতে দেখা যায় তাকে৷ গতকালই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে৷ সোনুকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ জেরায় জানা গিয়েছে, এক পরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে সে ওই পিস্তল নিয়েছিল৷ কিন্তু প্রশ্ন হল হিংসার সময় এই পিস্তল নিয়েছিল না কি আগে থেকেই তাঁর কাছে পিস্তল মজুত ছিল৷ আজ সোনুকে আদালতে তোলা হলে তাকে হেফাজতে চাইবে পুলিশ৷ পাশাপাশি সমস্ত ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ এর ভিত্তিতেই গ্রেফতার করছে দিল্লি পুলিশ৷
দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে হনুমান জয়ন্তীর দিন অশান্তির মাস্টারমাইন্ড মহম্মদ আনসার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার কুমারপুর গ্রামের বাসিন্দা৷ তিনি আদতে আসমের বাসিন্দা হলেও শ্বশুরবাড়ির কাছেই বাড়ি তৈরি করেছিলেন৷ ছাঁটের ব্যবসা করতে নেমে উল্কার গতিতে উত্থান হয় তাঁর৷ কোটি টাকার মালিক হন তিনি৷ গত চার-পাঁচ বছর দিল্লিতে থাকলেও, বছরে দুই-একবার গ্রামের বাড়িতে আসত৷ রবিনহুড ভাবমূর্তি বজায় রাখতে স্থানীয় ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়ে সাহায্য করত৷ চলত দেদার খাওয়া দাওয়া৷ গ্রামবাসীদের দাবি, দিল্লি কাণ্ডে আনসারের যোগ ভিত্তিহীন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে৷
দিল্লির ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে আনসারকে৷ তাঁর সঙ্গেই জড়িয়ে গেল বাংলার নাম৷ আপাতত ফাঁকা আনসারের হলদিয়ার বাড়ি৷ দিন ১৫ আগে এই বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ছিলেন৷ পরে তিনি চলে যান৷ গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, যখনই আনসার গ্রামে আসতেন, সকলের সঙ্গে ভালোভাবে মিশতেন৷ দান ধ্যান করতেন৷
শনিবার দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী এলাকা দিয়ে হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত শোভযাত্রা যাচ্ছিল। অভিযোগ, হঠাৎ করে সেই শোভাযাত্রার উপর পাথর ছোড়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী। এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী। যদিও পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছল বিশাল পুলিশ বাহিনী।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>