পুজোর মুখে বেহাল পরিবহণ, কুড়মিদের অবরোধে স্তব্ধ রেল, পরিবহণকর্মীদের আন্দোলনে বন্ধ বাস

পুজোর মুখে বেহাল পরিবহণ, কুড়মিদের অবরোধে স্তব্ধ রেল, পরিবহণকর্মীদের আন্দোলনে বন্ধ বাস

কলকাতা:  পুজোর মুখে বেনজির পরিবহণ সঙ্কট৷ অবরুদ্ধ রেল, স্তব্ধ বাস৷ ভোগান্তির ১০০ ঘণ্টা পার৷ এখনও পুরুলিয়া-খড়্গপুরে চলছে রেল অবরোধ৷ কুড়মিদের আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণার পরেও অবরুদ্ধ রেলপথ৷ টানা পাঁচ দিন ধরে রেল-সড়ক অবরোধের ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে মানুষ৷ পাঁচ দিনে বাতিল প্রায় ২৫০টি ট্রেন৷ অথচ হুঁশ নেই কারও৷ 

আরও পড়ুন- ব্যাক সাপোর্ট না থাকলে বলি না! তৃণমূল বিধায়কদের ‘যোগাযোগ’ নিয়ে অনড় মিঠুন

লাগাতার অবরোধের পর শনিবার আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন কুড়মি সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা৷ এর ফলে আশা করা হয়েছিল, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে৷ কিন্তু, মুখ্য উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত মানি না বলে হুঁশিয়ারি দেয় কুড়মিদের একাংশ৷ খড়্গপুরের খেমাশুলি স্টেশনে এখনও অব্যাহত রয়েছে রেল অবরোধ৷ যাত্রীদের মনে একটাই প্রশ্ন, দুর্ভোগ কবে মিটবে? রেলের পাশাপাশি চলছে সড়ক অবরোধও৷ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে শয়ে শয়ে ট্রাক৷ এর মধ্যে রয়েছে কাঁচামাল বা সবজির গাড়িও৷ ফলে এবার তা পচতে শুরু করবে বলেই আশঙ্কা৷ 

দুর্ভোদের ছবি ধরা পড়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলাতেও৷ না, এখানে কোনও অবরোধ চলছে না। তবে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার অস্থায়ী কর্মচারীরা স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন৷ তারই প্রভাব পড়েছে ধর্মতলায়৷ কার্যত বাসের দেখা নেই৷ বহু মানুষ অপেক্ষায় আছেন, যদি বাস আসে৷ দূরদুরান্ত থেকে যাঁরা শহর কলকাতায় চাকরি করতে আসেন, তাঁদের অনেকেই শনিবার সপ্তাহান্তে বাড়ি ফিরে যান৷ কিন্তু ধর্মতলায় এসে তাঁরা দেখেন বাস নেই৷ এক যাত্রী বলেন, বাগনান যাব৷ দেড়-দুই ঘণ্টা হতে চলল দাঁড়িয়ে আছি৷ অথচ বাস আসছে না৷ কী করব বুঝতে পারব না৷ বাস না পেলে রাস্তায় বসে থাকতে হবে৷ সরকারের তরফে কোনও বন্দোবস্ত করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি৷

এদিকে, দুর্গাপুর থেকে কলকাতা পর্যন্ত বাস পরিষেবাও প্রায় ৯০ শতাংশ বন্ধ রয়েছে৷  ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের৷ যাঁরা শুধুমাত্র বাসের উপর নির্ভরশীল, তাঁরা পড়েছে সবচেয়ে বেশি সঙ্কটে। শুধুমাত্র স্থায়ী কর্মীরাই ধর্মতলা ও করুনাময়ীর উদ্দেশে দুর্গাপুর থেকে বাস নিয়ে রওনা দিয়েছেন৷ বাকি সমস্ত রুটের বাস বন্ধ রয়েছে৷ INTTUC-র ব্যানার নিয়ে চার দিন ধরে লাগাতার দুর্গাপুর বাস ডিপোয় আন্দোলন চলাচ্ছে অস্থায়ী পরিবহণ কর্মীরা৷ তাঁদের দাবি, স্থায়ীকরণ ও বেতনবৃদ্ধি৷  এক আন্দোলনকারী বলেন, পরিবহণমন্ত্রী আগে আলোচনায় বসুক৷ তার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ 

এদিকে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মন্ত্রী হিসাবে আমি তাঁদের কথা শুনব৷ যতটা সাহায্য করা সম্ভব করা হবে৷ তাঁদেও পরিবার আছে৷ কিন্তু একজন পরিবহণ কর্মী হিসাবে পরিবহণ ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়াটা কখনই দায়িত্বশীল আচরণ নয়৷’’