কলকাতা: শুক্রবার ভরদুপুরে পার্ক সার্কাসে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ঘটে যাওয়া গুলি কাণ্ডে কার্যত আতঙ্কিত কলকাতাবাসী। এদিন দুপুরে হঠাৎই বাংলাদেশ হাইকমিশনের আউটপোস্টে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী তাঁর সার্ভিস রিভলবার দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। অন্যদিকে এক বাইক চালকের পিঠেও গুলি লেগেছে বলে জানা যায়। এরপর ওই পুলিশকর্মী নিজেই নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী’ হন। এই হামলার ঘটনার প্রায় এক ঘন্টা পর খোঁজ মেলে আহত বাইক আরোহীদের। জানা যাচ্ছে কলিন স্ট্রিটের বাসিন্দা মোহাম্মদ বশির আলম এবং আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বাসিন্দা মোহাম্মদ সরফরাজ এই হামলায় আহত হয়েছেন। তার মধ্যে বশিরের পিঠে গুলি লেগেছে এবং অন্যজন অর্থাৎ মোহাম্মদ সরফরাজের গা ঘেঁষে গুলি বেরিয়ে গিয়েছে। তবে দুজনেই বিপদমুক্ত বলে জানিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল। অন্যদিকে সরফরাজের বাইকের পিছনে বসে ছিলেন হাওড়া দাসনগরের মিস্ত্রি বাগানের বাসিন্দা রিমা সিংহ। সশস্ত্র পুলিশ কনস্টেবলের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রিমার। একটি গুলি তার মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। রিমা এবং আত্মঘাতী পুলিশ কনস্টেবলের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে তাদের দু’জনকেই চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জানা যাচ্ছে ২৮ বছর বয়সে রিমা সিংহ শুক্রবার দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তার হবু স্বামী প্রবীর রায়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে। সেই মতোই তিনি ওই অ্যাপ ভিত্তিক বাইকটি বুক করেন। এরপর পার্ক সার্কাস মোড়ের কাছাকাছি আসতেই ঘটে সেই বীভৎস ঘটনা। কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য চরূপ লেপচার ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রিমার। ইতিমধ্যেই রিমার মৃত্যুসংবাদ পৌঁছেছে তার দাসনগরের বাড়িতে। ঘটনাটি জানানো হয়েছে তার হবু স্বামী প্রবীর রায়কেও। পরিবার সূত্রে খবর, মাস খানিক বাদেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল রিমার। আজ বিয়ের তারিখ পাকা করতেই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই বের হওয়াই যে শেষ বের হওয়া তা এখনো বিশ্বাসই করতে পারছেন না রিমার মা।
অন্যদিকে শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান খোদ পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে মানসিক অবসাদ থেকে এই ঘটনা ঘটিয়েছে হামলাকারী ওই পুলিশ আধিকারিক। তবে গোটা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। অন্যদিকে আত্মঘাতী পুলিশকর্মীর সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন কমিশনার। তবে তিনি জানিয়েছেন পার্ক সার্কাস এলাকার অন্য কোনো ঘটনার সঙ্গে এই হামলার ঘটনার কোনো যোগসুত্র নেই।