বসিরহাট: বয়স ষোলো৷ নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ের সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন। মেয়ের মেহেন্দি গায়ে হলুদ সম্পূর্ণ। বাড়িতে প্যান্ডেল সানাই বাজছে। চারিদিক আত্মীয় স্বজনকে ভিড় জমাচ্ছে বিয়েবাড়িতে। ভুরিভোজ শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই সময় হঠাৎ হাসনাবাদ চাইল্ড লাইনের ও বিডিওর কাছে টোল-ফ্রি ১০০ নম্বরের ফোন যায় যে নাবালিকার বিয়ে দিচ্ছে বাবা।
বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বরুনহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটাখালি গ্রামের ঘটনা। এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছান কন্যাশ্রী দপ্তর আধিকারিক প্রণব মুখেপাধ্যায়৷ সঙ্গে হিঙ্গলগঞ্জ পুলিশ, চাইল্ড লাইনের সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসন৷ বর শুধু আসার অপেক্ষায়৷ প্রশাসনের কর্তারা মেয়ের পরিবারকে জানান, নাবালিকার বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। পড়াশোনার জন্য কন্যাশ্রী রূপশ্রী প্রকল্প রয়েছে৷ তার সব রকম সাহায্য সরকার করবে। এমনকি পড়াশুনায় সমস্ত দায়িত্ব প্রশাসন নেবে। এই বলে বিয়ে বন্ধ করে দেন এবং নাবালিকার বাবা ও বাবা, সরকারি আধিকারিকদের কাছে মুচলেকা দিয়ে বিয়ে বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেন।
বস্তুত, নাবালিকার বাবা আলাউদ্দিন মিস্ত্রি পেশায় শ্রমিকের কাজ করেন৷ মা আমিনা মিস্ত্রি৷ আলাউদ্দিন তামিলনাড়ুতে শ্রমিকের কাজ করেন। আজকে মেয়ের বিয়ে দিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সে তামিলনাড়ুতে আবার চলে যাবেন। তাই জন্য তড়িঘড়ি বিয়ের আয়োজন করেছিলেন হিঙ্গলগঞ্জ পেশায় দর্জি বছর পঁচিশের এক যুবকের সঙ্গে। বরের বাড়ির লোকজন খবর পেলে তারা আর বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়নি। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে এত বার্তা, প্রচার, কোটি কোটি টাকা ব্যয়৷ তাহলে কি এই বার্তা তাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না? নাকি সবজেনেও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না৷ উঠছে প্রশ্ন৷