কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর সিবিআই হাজিরায় চাঞ্চল্যকর মোড়। মন্ত্রীর আবেদন গ্রহণ করলেন না বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর সিবিআই ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। জানা যাচ্ছে, মন্ত্রীর আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি জানিয়েছেন যাঁরা দেশের জন্য প্রাণ নিবেদন করেছিলেন সূর্য্য সেন, বাঘা যতিন,ক্ষুদিরাম তাঁদের জন্মভূমি তে শিক্ষা ক্ষেত্রে এত বড় দুর্নীতি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
জানা যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর আবেদন শুনতে পর্যন্ত চায়নি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার এই মামলাটি উঠেছিল বিচারপতির হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু মামলাটি শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করেনি বেঞ্চ। ফলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে সিবিআইয়ের হাজিরা এড়ানোর আর কোনও পথই কার্যত খোলা নেই রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং তাঁর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর কাছে।
মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি চুপিসারে নিজের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে তাঁর মেয়েকে মেখলিগঞ্জ স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী বেআইনিভাবে পেয়েছেন একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর স্কুল শিক্ষিকার ওই চাকরি যেখানে মেরিট লিস্টে তাঁর নামই ছিল না। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। সেই মামলার শুনানিতেই মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, কিভাবে অঙ্কিতা চাকরি পেলেন এবং তাতে কোনও জালিয়াতি রয়েছে কিনা তা তদন্তসাপেক্ষ। গোটা ঘটনাটিতে একটি চক্রান্ত রয়েছে বলেই মনে করছে উচ্চ আদালত। এমতাবস্তায় কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছে সিবিআইকে। জানানো হয়েছে, এই বিষয়টিতে কোনও জালিয়াতি রয়েছে কিনা তা তদন্ত করবে সিবিআই। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে মঙ্গলবার রাত ৮ টার মধ্যে মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও সিবিআই দফতরে আসেননি মন্ত্রী। মঙ্গলবার রাত পৌনে আটটা নাগাদ পদাতিক এক্সপ্রেস ধরে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও মাঝপথেই মন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী উধাও হয়ে গিয়েছেন বলে খবর মেনে। তখন থেকেই জল্পনা শুরু হয় যে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যেতে পারেন মন্ত্রী। সেই মতোই বুধবার দুপুরে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হন মন্ত্রীর আইনজীবী।