বাংলা থেকে ‘জল’ মেশানো রিপোর্ট যেত মোদি-শাহের কাছে, ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব

বাংলা থেকে ‘জল’ মেশানো রিপোর্ট যেত মোদি-শাহের কাছে, ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব

কলকাতা:  লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল স্তরে নিজেদের অবস্থান জানতে তৎপর হয়েছিল কেন্দ্র বিজেপি। আর সেই রিপোর্টে জানা গিয়েছে,  বুথ পর্যায়ে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে সারা দেশের মধ্যে সব থেকে পিছিয়ে বাংলা। এরপরেই বঙ্গ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করছে। অভিযোগ, এতদিন যে রিপোর্ট বঙ্গ বিজেপি কেন্দ্রের কাছে পাঠাতো, তাতে অনেকটাই জল মেশানো থাকত। 

এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বঙ্গ বিজেপির নেতারা রিপোর্ট অনেকটাই বিজেপির দিকে ঝোল টেনে পাঠাতেন। আর সেই কারণেই নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। বাংলা জয়ের স্বপ্নেই বিভোর হয়েই একের পর এক জনসভা করেছিলেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে। তা না হলে মোদি-শাহের দাবির সঙ্গে বাস্তবের আকাশ-পাতাল পার্থক্য হবে। কেন্দ্র বিজেপি মনে করছে, গত কয়েকবছরে রাজ্যের রিপোর্টে নেতারা অনেক জল মিশিয়েছেন। সঠিক রিপোর্ট পেতে বিজেপি কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, কেন্দ্র বিজেপি এবার রাজ্যের নেতাদের থেকে প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতে চাইছে। অনলাইনের মাধ্যমেই ডেটা সংগ্রহ করতে সচেষ্ট হয়েছেন কেন্দ্র বিজেপি। এই বিষয়ে কেন্দ্র বিজেপির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এই অনলাইনের মাধ্যমে বুথের সার্বিক তথ্য, বুথ সভাপতি ও সদস্যদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, জন্ম তারিখ, ছবি, প্যান বা আধার কার্ডের নম্বর সহ বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। 

এখানেই কেন্দ্র বিজেপি থেমে থাকতে চাইছে না। ডেটা সংগ্রহে আরও স্বচ্ছতা আনতে বিজেপি একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ আনতে আগ্রহী হয়েছে। সেখানে বিজেপির নিচু তলার সদস্য থেকে দলের আধিকারিক বিষয়ক তথ্য একই ফরম্যাটে রাখা থাকবে। বিজেপির এক নেতা জানিয়েছেন, আগে যে যেভাবে ইচ্ছা তথ্য জমা করত। এবার তথ্যে দেওয়া নম্বরে ফোন আসবে। জমা হওয়া তথ্য সম্পর্কে একাধিক প্রশ্ন করা হবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য।  এর জেরে বেজায় চাপে পড়েছে বঙ্গ বিজেপির নেতারা। ইতিমধ্যে বঙ্গ বিজেপির তরফে ‘ডেটা প্রবন্ধন ও উপযোগ’ নামের একটি কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটি রাজ্যের জেলাগুলোর নিচু তলার কর্মীদের ডেটা সংগ্রহ ও প্রাথমিক ঝাড়াই বাছাইয়ের কাছ শুরু করেছে। 

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর কেন্দ্রীয় বিজেপি নীচু তলার শক্তি পরীক্ষা করতে সার্বিক তথ্য সংগ্রহের কাজ করে। মূলত রাজ্য পার্টি এর মূল্যায়ন করে। এরপর এই রিপোর্ট চলে যায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। তবে বাংলার বর্তমান হাল দেখে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় কমিটি। তাই এই কাজ নিজেদের দায়িত্বেই নিয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × one =