ক্ষোভে নির্দলে স্ত্রী, ‘দলের স্বার্থে’ বিচ্ছেদের নোটিস তৃণমূল প্রার্থী স্বামীর

ক্ষোভে নির্দলে স্ত্রী, ‘দলের স্বার্থে’ বিচ্ছেদের নোটিস তৃণমূল প্রার্থী স্বামীর

কলকাতা: রাজনীতির সমীকরণে সংসার ভাঙার ঘটনা এর আগেও ঘটেছে৷  বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও সুজাতা মণ্ডলের বিচ্ছেদের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা। আরও একবার ঘর ভাঙল৷ পুরভোটের আগে টিকিট নিয়ে টানাপোড়েনে স্ত্রীকে বিচ্ছেদের নোটিস পাঠালেন তৃণমূল প্রার্থী স্বামী।

আরও পড়ুন- রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে মামলা ‘ভিত্তিহীন’! মামলা খারিজ করল হাই কোর্ট

পুরভোটে তৃণমূলের টিকিট পেয়েছে স্বামী৷ উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সুরজিৎ রায়চৌধুরী। তাঁর স্ত্রী রীতা রায়চৌধুরীও তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। পুরভোটের প্রথম প্রার্থী তালিকায় রীতার নাম থাকলেও সংশোধিত তালিকা থেকে বাদ পড়ে তাঁর নাম। প্রথমে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাঁকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয় টুম্পা দাসকে। এরপরই নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন রীতা৷ 

দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ সুরজিৎ রায়চৌধুরী একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, দলের স্বার্থেই তিনি  স্ত্রীকে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছেন। তবে এই বিষেয়ে মুখে কুলুপ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী রীতার৷ তিনি বলেন, এটি তাঁদের পারিবারিক বিষয়। যা বলার নির্বাচনের পরেই বলবেন। তবে তিনি বিচ্ছেদের নোটিস পেয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমের সামনে স্বীকার করে নিয়েছেন৷

এদিকে বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করলে সোজা বহিষ্কারের পথে হাঁটছে শাসকদল। এতেই ছেদ পড়ল দীর্ঘ দিনের দাম্পত্যে। দলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে নির্দল প্রার্থী স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিস পাঠান সুরজিৎ। তিনি বলেন, “আমি আমার মিসেসকে ডিভোর্স নোটিস পাঠিয়েছি।” এ প্রসঙ্গে রীতা দেবীর বক্তব্য, “নোটিস পেয়েছি। অ্যাকসেপ্ট করেছি।” সুজিতের কথায়, অনেকেই বলছেন দলে স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে টিকিট দেওয়া যাবে না৷ কিন্তু অনেক জায়গাতেই স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে টিকিট পেয়েছেন৷ দু’রকম বিচারে শাস্তি পেতে হল৷ দলের স্বার্থে স্ত্রীকে বিচ্ছেদ দিলাম৷

উল্লেখ্য, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দল প্রার্থীরা যাতে ভোটের ময়দান থেকে সরে দাঁড়ান, সেই নির্দেশ দিয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নির্দেশ এসেছিল, পুরভোটে নিজেদের প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। না হলে সোজা বহিষ্কার৷ কিন্তু এই নির্দেশের পরেও বহু প্রার্থী সরে দাঁড়াননি।

বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে। ঘটনাচক্রে দক্ষিণ দমদমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও এবার নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে বিরোধীদের বক্তব্য, আদৌ এমন কিছু ঘটেছে কি না, সেটা আগে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। তবে ঘটলে তা অনভিপ্রেত।