কাঁথি : অসাধু হোটেল মালিক তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালে কাঁথি এগরা রাজ্য সড়কে কাঁথি-১ ব্লকের নাটদিঘী বাসস্ট্যাণ্ড সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে কয়েক শতাধিক গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভের মহিলাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
দীর্ঘক্ষণ অবরোধের জেরে রাজ্য সড়কের উপর দাঁড়িয়ে পড়ে একাধিক যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী লরি। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কাঁথি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ। পুলিশের সামনে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। অবশেষে উত্তেজিত গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। তারপরেই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে সেই হোটেল বন্ধ করতে হবে। গ্রামবাসীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে অবিলম্বে তপন জানাকে গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি পুলিশের সামনে কুশপুতুল দাহ করেন গ্রামবাসীরা।
সূত্রের খবর, কাঁথি এগরা রাজ্য সড়কের পাশে রয়েছে একটি হোটেল। খাওয়ার দোকান ছাড়াও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ওই হোটেলে। হোটেলের মালিক রয়েছেন নাটদিঘী গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েতের সদস্য রেখা বেরা স্বামী তপন বেরা। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে হোটেলে অনেক অবৈধ ব্যবসা করছেন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। সেখানে হোটেলে দেহ ব্যবসা ও মদ বিক্রি হয় বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। এরপর গ্রামবাসীরা গণস্বাক্ষর করে এই হোটেলটি বন্ধ করে দেয়। গত কয়েকদিন আগে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে কয়েকজন হোটেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনেন হোটেলের মালিক তপন বেরা। মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে দাবি করে প্রতিবাদ জানান গ্রামবাসীরা। হোটেল মালিক কাজী থানায় কয়েকজন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
তার প্রতিবাদে সরব হন গ্রামবাসীরা।শুক্রবার সকালে কাঁথি এগরা রাজ্য সড়কে কাঁথি ১ ব্লকের নাটদিঘী বাসস্ট্যাণ্ড সংলগ্ন রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে কয়েক শতাধিক গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের পক্ষে অবরোধকারী দুর্গাশঙ্কর মণ্ডল বলেন ” তপন জানার এই হোটেল এক বছরের বেশি বন্ধ ছিল। গত মঙ্গলবার আমাদের ফাঁসানোর জন্য পথের মধ্যে আগুন লাগিয়ে ভাঙচুর চালায় তপন জানা লোকজন। বৃহস্পতিবার রাতে তপন জানার লোকজন গ্রামবাসীদের ধমক দেয়। গ্রামবাসীদের হুমকি দিচ্ছে, নিজের ক্ষতি করে গ্রামবাসীদের ফাঁসিয়ে দিব।
অবরোধকারী এক মহিলা বলেন ” গ্রামের মধ্যে লজ করে বিভিন্ন অবৈধ কাজকর্ম চালাচ্ছেন। লজে মেয়ে থেকে মদের ব্যাবসা চালাচ্ছে। আমাদের ১০০ দিনের কাজের টাকা এখনো দেয়নি। আম্ফান থেকে সরকারি প্রকল্পের টাকা সই করিয়ে নিয়ে আমাদের টাকা দেয়নি। উনার স্ত্রী তৃণমূলে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হলেও বিধানসভা নির্বাচনের থেকেই উনি বিজেপি করছে।” কাঁথি থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ” গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।” যদিও এই বিষয়ে হোটেল মালিক তথা পঞ্চায়েত সদস্য স্বামী তপন জানার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।