মমতার প্রতি বিদ্বেষ ছিল ওঁর, নিজেকে ভাবতেন সবার উর্ধ্বে, পার্থকে নিয়ে বিস্ফোরক বৈশাখী

মমতার প্রতি বিদ্বেষ ছিল ওঁর, নিজেকে ভাবতেন সবার উর্ধ্বে, পার্থকে নিয়ে বিস্ফোরক বৈশাখী

 কলকাতা:  দিন কয়েক আগেও তিনি ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মন্ত্রী৷ এছাড়াও একাধিক পদের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে৷ কিন্তু, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসাররা তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করার পর থেকেই তাঁকে ছেঁটে ফেলেছে দল৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মুখ পুড়িয়ে মন্ত্রীত্ব হারাতে হয়েছে তাঁকে৷ বাদ দেওয়া হয়েছে সমস্ত দলীয় পদ থেকে৷ এবার তাঁর বিরুদ্ধে সরব হলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যা৷ তাঁর কথায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেকে জাহির করতেন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর মনে বিদ্বেষ ছিল বলেও দাবি শোভন ‘বান্ধবী’র৷ 

আরও পড়ুন- ইতিহাসের পাঠ্যে থাকছেন পার্থ! ম্যান্ডেলার প্রসঙ্গ টেনে জানালেন সিলেবাস কমিটির প্রধান

কিন্তু প্রশ্ন হল এতদিন কেন পার্থর  বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি তিনি? এ প্রসঙ্গে একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বৈশাখী বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি তিনি দলীয় সংগঠনেও শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলেন। উনি সেটা বরাবর জাহিরও করতেন। বলতেন, আমি নম্বর টু। আমার উপর আর কেউ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সব কথায় সিলমোহর দেন।” 

এখানেই শেষ নয়, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে বোমা ফাটিয়ে বৈশাখীর দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মনে বিদ্বেষ ছিল৷ তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করতেন পার্থ৷ আমি শোভনকে (শোভন চট্টোপাধ্যায়) বলেছিলাম, তুমি সবসময় দিদি, দিদি বল। কিন্তু, আমি মন্ত্রীর মুখ থেকে যা শুনি। শোভন এটা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিল। আমি পার্থর অত ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ছিলাম না ঠিকই। তাও শুনেছি।” 

বৈশাখীর কথায়, “উনি নিজেকে মনে করতেন তিনি মন্ত্রিসভার সবার ঊর্ধ্বে। ওঁর পড়াশোনা, পরিবার, সবমিলিয়ে নিজেকে সবার ঊর্ধ্বে ভাবতেন।” বৈশাখী আরও বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী প্রয়াত হওয়ার পর ওঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এখন কী ভাবে সময় কাটে আপনার? পার্থ বলেছিলেন, কবিতা লিখি, সিরিয়াল দেখি, সময় কেটে যায়। এখন যা দেখতে পাচ্ছি, তাতে বুঝতে পারছি না, উনি কী কবিতা লিখতেন! তবে শুনেছিলাম, ওঁর কবিতার বই বেরবে। জানি না সেটা আদৌ হয়েছে কি না।”

এদিকে, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে৷ এ প্রসঙ্গে বৈশাখী বলেন, “ষড়যন্ত্র হলে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতেই সেটা জাহির করা উচিত ছিল৷ উনি অদ্ভুত মৌনতা অবলম্বন করার পর এখন বলছেন ষড়যন্ত্রের শিকার৷ হতেই পারে উনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, তাহলে ওঁর এটাও বলা উচিত কারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন৷ ওঁর ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে৷ কে ষড়যন্ত্র করে ওঁর ঘনিষ্ঠকে ফাঁসালেন, সেটাও তো জানানো উচিত৷”