মালদা: ‘‘প্রতিদিন বোমার শব্দ কানে আসতো। আতঙ্কের মধ্যে ঘুম আসত না। খাবারের অভাব, পানীয় জলের অভাব তো ছিলই। বুঝতে পারছিলাম না এখান থেকে কিভাবে বাড়ি ফিরব । একসময় খারকিভ খালি করার নির্দেশ আসে৷ ১-৩ডিগ্রি তাপমাত্রা উপেক্ষা করে ১৫ কিলোমিটার হেঁটে পিসোচীনে এসেছিলাম। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের একটা শিবিরে রাখে। সেখানে দিন কয়েক থাকার পর তারাই বাসে করে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছে দেয়।’’ রণভূম ইউক্রেন থেকে ফিরে মালদার ইংরেজবাজার শহরের মালঞ্চ পল্লীর বাড়িতে বসেই কথাগুলো বলছিলেন খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী মৌমি সিংহ।
খানিক থেমে যোগ করেন, ‘‘রোমানিয়া পৌঁছানোর পর আমাদের আর কোনও অসুবিধা হয়নি। ভারতীয় দূতাবাস থেকে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা, গরম পোশাক সবই দেওয়া য়৷ পরে আমাদের ভারতীয় বিমানে তুলে দিল্লি পৌঁছে দেওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে কলকাতা।’’ ইউক্রেন থেকে বাড়ি ফিরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন মৌমি। তবে ডাক্তারি পড়াটা কোথায় কিভাবে শেষ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। মৌমির বাবা সন্দীপ কুমার সিংহ পেশায় ব্যবসায়ী, মা মিতা সিংহ। ইংরেজবাজার শহরের মালঞ্চ পল্লীতে তাদের বাড়ি। মৌমি তাদের একমাত্র সন্তান।
দু’বছর আগে ইউক্রেনে খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। মৌমীর মা জানান, মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসায় খুব খুশি তারা। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শতকোটি প্রণাম। তবে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার যাতে আগামী দিনে পড়ার দায়িত্বটা নেয় পাশাপাশি এই দেশ পড়ার ব্যবস্থা করে দেয়। সে বিষয়েও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।