কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার মিডলম্যান প্রসন্ন কুমার রায়ের আরও সম্পত্তির হদিশ৷ মহিষবাথানে মিলল ফ্ল্যাটের খোঁজ৷
আরও পড়ুন- জেল বন্দি অনুব্রতর বাড়িতে এখনও পুলিশি ‘পাহারা’ কেন? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা
এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে গত সপ্তাহেই গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্নি জামাই প্রসন্ন কুমার রায়৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তাঁর ভূমিকা ছিল ‘মিডলম্যান’-এর৷ এসএসসি’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহার সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল তাঁর৷ তদন্তে নেমে সিবিআই আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, প্রসন্নর গাড়ি ভাড়া দেওয়া সংস্থার অফিসের বসেই চলত বেআইনি নিয়োগের লেনদেন। মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে যে সব চাকরি প্রার্থীদের অবৈধ নিয়োগ করা হয়েছে, সেই সব প্রার্থীদের থেকে টাকা নেওয়ার কাজ চলত প্রসন্নর অফিসে বসে৷ রাত ১০ টা বা ১১ টার পর কালো কাঁচ তোলা গাড়ি এসে দাঁড়াত প্রসন্নর অফিসের বাইরে। ওই গাড়ি করেই নাকি টাকা এসে পৌঁছত সল্টলেক জিডি ২৫৩-র ওই অফিসে৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রসন্নর ওই সংস্থার বাইরে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, অসফল চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহের জন্য বেশ কয়েকজন বিশ্বস্ত এজেন্ট ছিল৷ তাঁদের মধ্যেই অন্যতম ছিলেন প্রদীপ সিং। প্রদীপকে জেরা করেই উঠে আসে প্রসন্নর নাম৷
প্রদীপ এবং প্রসন্নকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই নতুন নতুন সম্পত্তির হদিশ মিলছে৷ সল্টলেক ও নিউ টাউন এলাকায় একাধিক সম্পত্তির মালিক প্রসন্ন৷ নিউটাউনের বলাকা আবাসনে দুটি ফ্ল্যাটের পাশাপাশি কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় একটি অভিজাত ভিলা রয়েছে তাঁর। প্রাসাদোপম সেই ভিলার সামনে রয়েছে চোখ ধাঁধানো বাগান। এখানেই শেষ নয়৷ রাজারহাটের ধারসাইতেও তাঁর আরও একটি বাগান বাড়ির হদিশ পেয়েছেন সিবিআই-এর তদন্তাকীর অফিসাররা৷ এ ছাড়াও একাধিক জমির খোঁজও মিলেছে৷ প্রসন্নর সম্পত্তির তালিকা আরও দীর্ঘ৷ দিঘা, জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গে রিসর্ট রয়েছে তাঁর। বেশ কয়েকটি চা বাগানেরও মালিক পার্থের এই ভাগ্নি-জামাই। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এবার মিলল সল্টলেকের মহিষবাথানে বিলাসবহুল আবাসনে প্রসন্নর আরও একটি ফ্ল্যাটের হদিশ৷
এদিন সকাল থেকেই সেখানে তল্লাশি অভিযান শুরু করে সিবিআই৷ সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের কিছু পরে মহিষবাথানের ফ্ল্যাটটি কেনা হয়৷ যদিও এই ফ্ল্যাটটি এখনও হস্তান্তর হয়নি৷ সিবিআই আধিকারিকরা যখন এই আবাসনের ‘থ্রি এ ফ্ল্যাটে’ যান তখন, তখন বাইরে থেকে সেটি তালাবন্ধ ছিল৷ তালা খুলে তাঁরা ভিতরে তল্লাশি চালান৷
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে তাঁর গাড়ি ভাড়ার সংস্থা থেকে গাড়ি ভাড়া দিতেন প্রসন্ন৷ সেখান থেকেই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়৷ এসএসসি দুর্নীতি মামলায় উত্তর ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব ছিল প্রসন্নর কাঁধে৷ তিনি এই কাজটি করাতেন তাঁর সংস্থার কম্পিউটার অপারেচর প্রদীপ সিংকে দিয়ে৷ এই দুই মিডলম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এসএসসি’র দুর্নীতির টাকা কোন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হয়েছে, তার খোঁজ পেতে চাইছেন সিবিআই আধিকারিকরা৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>