কলকাতা: উপকূলবর্তী এলাকার খুব কাছে চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং৷ সোমবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই মুহূর্তে সাগরদ্বীপ থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণে এবং বাংলাদেশের বরিশাল থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে সিত্রাং৷ ক্রমেই উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর এই সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়৷ আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে আরও ঘনীভূত হয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে সিত্রাং৷
আরও পড়ুন- আরও কাছে সিত্রাং! বৃষ্টিতে ভাসবে কলকাতা-সহ ৭ জেলা, জারি কমলা সতর্কতা
সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েই ২৫ তারিখ ভোরে বরিশালের খুব কাছে তিনকোণা দ্বীপ এবং সন্দ্বীপের মধ্যে দিয়ে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে বাংলাদেশ উপকূলে৷ এর ফলে ২৪ ও ২৫ অক্টোবর, এই দু’দিন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, উত্তর ২৪ পরগণা ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে৷ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলি মূলত, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং নদিয়ায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার দুই এক জায়গায় মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে৷
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা আরও জানান, ২৪ তারিখ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ঘণ্টায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে৷ সন্ধ্যের পর হাওয়ার গতিবেগ বেড়ে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিমি হবে৷ হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার৷
এছাড়াও উপকূল সংলগ্ন কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে৷ ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৫০ কিমি৷ ২৫ তারিখ সকাল পর্যন্ত এই হাওয়া চলবে৷
অন্যদিকে মঙ্গলবার ভোরে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার৷ একই সময়ের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে হাওয়া বইবে৷ বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ৬০ কিমি৷ কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইবে৷ হাওয়ার সর্বোচ্চ গতেবেগ ঘণ্টায় ৬০ কিমি পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ তবে সকালের পর থেকে হাওয়ার গতি কমতে থাকবে বলেই আশ্বস্ত করেছেন তিনি৷
২৫ তারিখ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে৷ ফেরি বন্ধ রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে৷ বকখালি, সাগর, দিঘা, মন্দারমনিতে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ পাশাপাশি তিনি জানাচ্ছেন, উপকূলবর্তী সুন্দরবন, গোসাবা, হিঙ্গলগঞ্জ, কুমারমারিতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে৷ সেখানে কাচা বাড়ি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হবে কাঁচা রাস্তায়৷ পাকা রাস্তায় সামন্য ক্ষতি হতে পারে৷ মাঠে ধান থাকলে তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ মূলত ক্ষয়ক্ষতি হবে দুই ২৪ পরগণাতেই৷ বাকি জেলাগুলিতে ক্ষয়তির সম্ভাবনা নেই বলেই আশ্বাস সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ কলকাতায় দমকা হাওয়া চলবে৷ সোমবার সকালে হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩৮ কিমি৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>