নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতায় অভিনেত্রী পল্লবী দে-র আত্মহত্যার ঘটনা এখনও বেশ টাটকা। লিভ-ইন সম্পর্ক ও তার জেরে জটজটিলতা ঘিরে অকালে চলে যেতে হয়েছে তাঁকে। এই ধরনের বহু ঘটনা দেশজুড়ে অহরহ ঘটছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল সল্টলেকের গেস্টহাউস কাণ্ড। সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে আত্মঘাতী হয়েছেন রনি দত্ত নামে এক যুবক। আর সেই ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার পাশাপাশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর লিভ-ইন পার্টনার অনুশীলা চৌধুরী এবং অরিজিৎ পাত্র নামে অপর এক যুবককে।
গত দু’মাস ধরে আত্মঘাতী যুবক রনির সঙ্গে অনুশীলা লিইভন সম্পর্কে ছিলেন। এরপর তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় অরিজিৎ পাত্রের। অরিজিৎ কোন্নগরের বাসিন্দা। তরুণীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা কানাডায় হলেও তাঁদেরও পৈতৃক বাড়ি কোন্নগরে। তবে তরুণীর পরিবার কানাডাতেই থাকেন। কিন্তু নিজে স্বাধীনভাবে থাকবেন বলে কানাডায় না থেকে ওই তরুণী কলকাতায় চলে আসেন। এরপর সল্টলেকের ওই অতিথিশালায় ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন তরুণী এবং রনি। পরবর্তীকালে ফেসবুকের মাধ্যমে অরিজিতের সঙ্গে আলাপ হয় অনুশীলার। এরপর তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বলে পুলিশ মনে করছে। আর তাতেই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। ত্রিকোণ প্রেমের সমস্যা থেকেই তীব্র মনোমালিন্য ও অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন রনি। মনোবিদরা মনে করছেন লিভ-ইন সম্পর্ক অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশি দিন চিরস্থায়ী হয় না। আসলে সেখানে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা কম থাকে। তাই বিবাহিত জীবনের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কের তুলনাই চলে না। সেখানে দায়িত্ববোধের অভাব দেখা যায়। আর সেই জায়গা থেকেই তৈরি হয় নানা সমস্যা। আর তাতেই মাঝেমধ্যেই ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ।
একাধিক প্রেম, সেইসঙ্গে যথেচ্ছ যৌনাচারের তীব্র আকাঙ্ক্ষা। বারবার বদল করা হচ্ছে সঙ্গী। এই জাতীয় সমস্যা এখন এ যুগের তরুণ তরুণীদের মধ্যে আকছার দেখা যাচ্ছে। সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে খুন বা আত্মহত্যার ঘটনা আজ দেশে নতুন কিছু নয়। কম বয়সীদের মধ্যে সম্পর্ককে ঘিরে যেভাবে জট-জটিলতা তৈরি হচ্ছে তার জেরে ঘটে যাচ্ছে একের পর এক অনভিপ্রেত ঘটনা। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়গুলি নিয়ে মনোবিদদের ব্যাখ্যা, পুরুষ বা মহিলা সবাইকে নিজের জীবনের ক্ষেত্রে সংযত হতে হবে। এমন সম্পর্কে জড়ানো উচিত নয় যেখানে নিজের জীবন নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠে যায়। কিন্তু এই হাইটেক যুগে যথেচ্ছ যৌনাচারের ঘটনা আকছার চোখে পড়ছে। সেখানে কে দোষী, বয়ফ্রেন্ড না গার্লফ্রেন্ড, সেটা পরের কথা। ঘটনায় বহু ক্ষেত্রে মা-বাবার কোল শূন্য হয়ে যাচ্ছে। তাই এই যথেচ্ছ যৌনাচারের মানসিকতা নিয়ে পুরুষ ও মহিলা সবাইকেই সতর্ক করছেন মনোবিদরা। আর তাতেই এড়ানো যাবে এই ধরনের ঘটনা।