বাংলার এই মন্দিরে চিঠি দিলেই পূরণ হয় মনস্কামনা! জনশ্রুতিতে বেঁচে আছে ‘বড় কাছারি’র বিশ্বাস

বাংলার এই মন্দিরে চিঠি দিলেই পূরণ হয় মনস্কামনা! জনশ্রুতিতে বেঁচে আছে ‘বড় কাছারি’র বিশ্বাস

d464f2265ebb13729f87502b023f8e2f

আলিপুর: চিঠিতে মনের কথা লিখে দিলেই লাঘব হয় দুঃখ-কষ্ট… পূরণ হয় ইচ্ছে… বাংলার এই মন্দিরে এভাবেই মনের কথা জানান ভক্তরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাখরাহাটের কাছে অবস্থিত এই মন্দির বাবা বড় কাছারির মন্দির নামে পরিচিত৷

মন্দির চত্বরের এক গাছকে ঘিরে রয়েছে অদ্ভুত জনশ্রুতি। সেই গাছকেই বর্তমানে দেবতাজ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা।  সবাই বলেন,এই গাছে চিঠির আকারে মনস্কামনা জানালে, তা পূরণ হয়। সেই বিশ্বাস নিয়ে,চিঠি লিখে ভক্তরা তা বেঁধে দেন গাছের চারপাশে।

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিষ্ণুপুর থানার বাখরাহাটের কাছে ঝিকুরবেডিয়া গ্রামে অবস্থিত এই মন্দির। কলকাতা থেকে মাত্র দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার । এই পুণ্যভূমির এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলায় বর্গি আক্রমণ কাল অর্থাৎ ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে, বাংলার নবাব ছিলেন আলিবর্দি খান। তাঁর শাসনকালে বাংলায় মারাঠারা আক্রমণ করলে এই স্থানের হিন্দু কৃষক সম্প্রদায়ের মানুষজন শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। সেই সময় ভূতনাথের বরপ্রাপ্ত এক সাধু এই গ্রামবাসীদের সুবিধা-অসুবিধায় সাহায্য করেছিলেন। পরবর্তীকালে মারাঠাদের সঙ্গে তাঁদের শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠলে এই অঞ্চলের উন্নতি হয়।

বাংলার এই মন্দিরে চিঠি দিলেই পূরণ হয় মনস্কামনা! জনশ্রুতিতে বেঁচে আছে ‘বড় কাছারি’র বিশ্বাস
বাংলার এই মন্দিরে চিঠি দিলেই পূরণ হয় মনস্কামনা! জনশ্রুতিতে বেঁচে আছে ‘বড় কাছারি’র বিশ্বাস

ভূতনাথের বরপ্রাপ্ত সেই সাধুর মৃত্যু হলে, তাঁর মরদেহ ঐ শ্মশানে সমাধিস্থ করে গ্রামবাসীরা। যেখানে তাঁকে সমাধি দেওয়া হয়, সেখানে জন্ম নেয় একটি অশ্বত্থ গাছ। সেই গাছকেই বর্তমানে দেবতাজ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা। অশ্বত্থ গাছের তলায় এক গোলাকার বেদী বানিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় শিবলিঙ্গ। যা এখন বাবা বড় কাছারির মন্দির নামে পরিচিত৷ প্রাচীন অশ্বত্থ গাছটি ১৯৭৮ সালের বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ভক্তরা ঐ জায়গায় একটি নতুন অশ্বত্থ গাছ বসিয়ে পূজার্চনা শুরু করেন। স্থানীয়রা বলেন, এই গাছের কাছে মনস্কামনা জানালে আশ্চর্যজনক ভাবে পূরণ হয়ে যায়। এই বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করেই স্থানটির নাম মাহাত্ম্য আরও ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রতিদিনই বহু মানুষ মন্দিরে আসেন পুজো দিতে। তবে, শনি ও মঙ্গলবারে ভিড় কিছুটা বেশি। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা মনস্কামনা জানাতে আসেন। ছোট্ট কাগজে প্রার্থনা লিখে তাঁরা মন্দিরের গায়ে নির্দিষ্ট স্থানে বেঁধে দেন… সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দপ্তরের আর্থিক সহায়তায় মন্দিরের প্রবেশদ্বারে একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।